—প্রতীকী চিত্র।
বুধবার সকালে ফের এক বার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করল রানিবাঁধের কিশোরী। ভয়ে ভয়ে চাপা গলায় সে বলে, ‘‘আমাকে তাড়াতাড়ি এখান থেকে নিয়ে যাও। নইলে ওরা আমায় মেরে ফেলবে।’’ এমনটাই জানালেন উত্তরপ্রদেশের যৌনপল্লিতে বিক্রি হয়ে যাওয়া নাবালিকার পরিজনেরা।
মেয়ের ফোন পাওয়ার পরই তাঁরা যোগাযোগ করেন বাঁকুড়া চাইল্ডলাইনের কোঅর্ডিনেটর সজল শীলের সঙ্গে। যোগাযোগ করা হয় রানিবাঁধ থানার সঙ্গেও। কাজের টোপ দিয়ে ভিন্ রাজ্যের যৌনপল্লিতে ওই কিশোরীকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে কিশোরীর পড়শি গ্রামের বাসিন্দা অপূর্ব টুডুকে। ঘটনায় আর এক অভিযুক্ত কাঞ্চনা টুডু পলাতক। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা জানান, অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কাঞ্চনার ফোনের টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে তাঁকেও ধরার চষ্টা চলছে। প্রয়োজনে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে মেয়েটিকে উদ্ধার করতে যাবে জেলা পুলিশের একটি দল।
আরও পড়ুন:
কিশোরীকে যৌনপল্লিতে বিক্রি, ধৃত
বাড়ি ফিরল ওন্দার জঙ্গলে ফেলা শিশু
গত ২৩ জুলাই রানিবাঁধ থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই নাবালিকা। প্রায় এক মাসের মাথায় গত ২২ অগস্ট ওই নাবালিকার ভাই, মাসতুতো দিদি ও মেসোমশাইয়ের ফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ওই নাবালিকা ফোন করে জানায়, রানিবাঁধে তাঁদের পড়শি গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চনা টুডু ও অপূর্ব টুডু তাকে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে গিয়ে একটি যৌনপল্লিতে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে সে ওই যৌনপল্লিতে চরম নির্যাতনের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। দ্রুত পুলিশ নিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধারের আর্তি জানায় ওই কিশোরী। ওই নাবালিকার মাসতুতো দিদি বলেন, “ফোনে বোন জানিয়েছে, প্রতিদিনই নানা লোকজনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সে। এমনকী তাকে খুনেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তদন্ত শুরু হতে এমনিতেই অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। পুলিশ যত তাড়াতাড়ি বোনকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা নেবে, ততই ভাল।”
বাঁকুড়া চাইল্ডলাইনের কোঅর্ডিনেটর সজল শীল জানান, তিনি চিঠি লিখে গোটা বিষয়টি রাজ্য চাইল্ডলাইনে জানিয়েছেন। মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য রাজ্য চাইল্ডলাইনের পক্ষ থেকে উত্তরপ্রদেশ চাইল্ডলাইনে যোগাযোগ করার আবেদনও জানিয়েছেন সজলবাবু।