কিছু প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তিও কিছু আছে শিক্ষকদের

শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (এমএসকে) শিক্ষকেরা বেতন বৃদ্ধি এবং তাঁদের শিক্ষা দফতরের আওতায় আনার দাবিতে আন্দোলন করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

সারা বছর ধরে রাস্তায় নেমে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করেছেন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অনশনও করেছেন। কিন্তু প্রাপ্তি কতটা? শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশের মতে, কয়েকটি ক্ষেত্রে শুধু মিলেছে মৌখিক প্রতিশ্রুতি। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য আন্দোলনের ফলে শিক্ষকদের দাবিদাওয়া আংশিক মেনে নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সরকার।

Advertisement

বছরভর আন্দোলন করেছে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। ওই সংগঠনের নেত্রী পৃথা বিশ্বাসের দাবি, ‘‘যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনক্রমে যে ভুল আছে, তা মানতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বেতনক্রম কিছুটা উন্নত করেছে।’’ যদিও পৃথার মতে, ওই বিজ্ঞপ্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু ত্রুটি রয়ে গিয়েছে।

বিকাশ ভবনের সামনে নভেম্বরে টানা ৩২ দিন ধরে বিক্ষোভ অবস্থান এবং ২৮ দিন অনশন করেছেন পার্শ্ব শিক্ষকেরা। তাঁদের দাবি ছিল, বেতন বাড়াতে হবে এবং পূর্ণ শিক্ষকের মর্যাদা দিতে হবে। পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বিষয়ে সদর্থক আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি পালিত না-হলে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ফের শাসানি দিলীপের, পড়লেন বিক্ষোভের মুখেও

শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (এমএসকে) শিক্ষকেরা বেতন বৃদ্ধি এবং তাঁদের শিক্ষা দফতরের আওতায় আনার দাবিতে আন্দোলন করেছেন। ১৮ ডিসেম্বর একটি নির্দেশিকা দিয়ে শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে সব এসএসকে, এমএসকে-কে শিক্ষা দফতরের

আওতায় আনা হচ্ছে এবং সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পার্শ্ব শিক্ষকের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল এসএসকে, এমএসকে ও সুপারভাইজার ঐক্য মঞ্চের সভাপতি মুকুলেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘নতুন বিজ্ঞপ্তিতে অবসরের বয়স ৬৫ বছর থেকে ৬০ হয়ে গিয়েছে। বিষয়টা ভাবতে হবে।’’

পাশ গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক সংগঠন বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিটিএ) আন্দোলনে নামে নভেম্বরে। তাদের দাবি, সারা ভারতের পাশ গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বেতনহার রাজ্যেও চালু করতে হবে। সংগঠনের তরফে ধ্রুবপদ ঘোষাল বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে দাবি পূরণে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।’’

এসএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকপদে নিয়োগ এবং তালিকা ‘আপডেট’ করার দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে ২৮ দিন অনশন করেন এক দল প্রার্থী। অর্পিতা দাস নামে এক প্রার্থী জানান, তাঁদের আন্দোলনের ফলেই পরে আড়াই হাজার আসনে ‘আপডেট’ করেছে এসএসসি। বহু প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নতুন বেতন-কাঠামো ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বর্ধিত বেতন না-পাওয়ায় কলকাতা, যাদবপুর-সহ রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সম্প্রতি কর্মবিরতি পালন করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা নিজেদের দায়িত্ব অর্থাৎ পড়ানোর কাজটা কী ঠিকমতো করছেন কি?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement