বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের অনেকেই অনেক ভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কেউ কথা রাখেননি বলে তাঁদের অভিযোগ। শিক্ষকদের সমান দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও পারিশ্রমিক বৃদ্ধির দাবি না-মেটায় এ বার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছে তৃণমূলপন্থী পার্শ্বশিক্ষক সংগঠন। হুঁশিয়ারির সুরে তারা জানিয়েছে, আন্দোলন তো হচ্ছেই। বেতন-প্রশ্নের সুরাহা না-হলে সেই আন্দোলন এতটাই বড় আকার নিতে পারে যে, আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে।
বেতন না-বাড়লেও কাজের চাপ বেড়েই চলেছে পার্শ্বশিক্ষকদের। বিভিন্ন মামলার জটে থমকে রয়েছে স্কুলের উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ। প্রাথমিক স্তরে কিছু কিছু নিয়োগ হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলেই অনুযোগ শিক্ষা মহলের একাংশের। সেই জন্যই ক্রমশ চাপ বেড়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের উপরে। বাড়তি ভার সামলাতে তাঁরা পিছপা হননি। কিন্তু দায়িত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন না-বাড়ায় ক্ষোভ বাড়ছে তাঁদের।
মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মহেন্দ্র পাণ্ডে কয়েক সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিলেন, দেশের মধ্যে সব থেকে কম বেতন পান পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ব ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা। এ রাজ্যে প্রাথমিক স্তরে ৫৯৫৪ এবং উচ্চ প্রাথমিক স্তরে ৮১৮৬ টাকা পান তাঁরা। অথচ পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের মতোই কাজ করতে হয় তাঁদের।
‘‘কাজ বেড়ে চলেছে, অথচ বেতন বাড়ছে না। বিষয়টি রাজ্য সরকারের মানবিক ভাবে দেখা উচিত,’’ বলেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। শুধু বিরোধী শিবিরের ওই সমিতিই এই বিষয়ে সরব, তা নয়। ক্ষোভ গোপন রাখছে না সরকার-সমর্থক শিক্ষক সংগঠনও। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল পার্শ্বশিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি গোপাল দেবনাথ বলেন, ‘‘বহু বার সরকারের দ্বারস্থ হয়েছি। প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি। বেতন না-বাড়লে আমরা বড় আন্দোলনের পথে যাবো। তখন জেলায় জেলায় আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে।’’
সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রের খবর, পার্শ্বশিক্ষকেরা সর্বশিক্ষা মিশনের আওতায় পড়েন। সেই জন্য বেতনের ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার, বাকিটা দেয় রাজ্য। কিন্তু বেতনের কাঠামো ঠিক করার দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে রাজ্য সরকারের উপরেই। অন্যান্য রাজ্যে বেতন বাড়লেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সেই চেষ্টা হয়নি বলে পার্শ্বশিক্ষকদের অভিযোগ। তবে সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তা জানান, সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।