State News

সিঙ্গুরের জমিতে পদ্মের সংখ্যা বৃদ্ধি

ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতই তৃণমূল জিতেছে। কিন্তু মোট ২৪০টি আসনের মধ্যে গেরুয়া শিবির যে ২৮টি দখল করে নিয়েছে! গত বার বিজেপির দখলে ছিল মাত্র তিনটি আসন। আর যে সিঙ্গুরে এক সময়ে গাড়ি কারখানার জন্য বামেরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল, যে সিঙ্গুরে গত বারও পাঁচটি পঞ্চায়েত তাদের দখলে ছিল, সেখানে এ বার একটিও নয়।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০৩:৫৯
Share:

ছিল তিন। বেড়ে হল ২৮। ঘাসফুলের সিঙ্গুরে আরও বেশি করে পদ্ম ফুটল!

Advertisement

এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমিতে শাসক দলের মূল কাঁটা ছিল দলেরই বিক্ষুব্ধ এবং বিজেপি। সেই জোড়া কাঁটা উপড়ে ফেলতে পারল না শাসক দল। তাদের চিন্তা বেশি বাড়াল বিজেপি।

ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতই তৃণমূল জিতেছে। কিন্তু মোট ২৪০টি আসনের মধ্যে গেরুয়া শিবির যে ২৮টি দখল করে নিয়েছে! গত বার বিজেপির দখলে ছিল মাত্র তিনটি আসন। আর যে সিঙ্গুরে এক সময়ে গাড়ি কারখানার জন্য বামেরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল, যে সিঙ্গুরে গত বারও পাঁচটি পঞ্চায়েত তাদের দখলে ছিল, সেখানে এ বার একটিও নয়। নির্দল পেয়েছে ২৬টি আসন।

Advertisement

বাম আমলে, ২০০১ সাল থেকেই সিঙ্গুর তৃণমূলের। তখন থেকেই বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তার পর যত ভোট হয়েছে, তত উড়েছে সবুজ আবির। এখানে জমি আন্দোলন করেই বিরোধী নেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গাড়ি কারখানার জন্য অধিগৃহীত জমি ফিরে পেয়েছেন গ্রামবাসী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেই জমিকে ‘চাষযোগ্য’ করে দিয়েছে প্রশাসন। তার পরেও এ বার ভোটে এত পদ্ম ফুটল কী করে?

বিধায়কের দাবি, ‘‘সিপিএম দুর্বল হয়ে গিয়েছে। আমাদের নিজেদের ভুল বোঝাবুঝির জন্য বিজেপি সুবিধা পেয়েছে। ভোট পেতে ওরা পয়সাও খরচ করেছে।’’ ভোটের জন্য পয়সা খরচের কথা মানেননি বিজেপির সিঙ্গুর মণ্ডলের সভাপতি সঞ্জয় পাণ্ডে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সিঙ্গুরের অধিকাংশ পঞ্চায়েতে প্রতিনিধি দিতে পেরেছি, সেটাই আমাদের জয়। এখন সিঙ্গুরে আমরা প্রধান বিরোধী দল।’’

রাত পর্যন্ত এই ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসনগুলির ফলাফল জানা যায়নি। ফলে, সেখানে কী চমক রয়েছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শাসক দলের নেতারা। বস্তুত, বৃহস্পতিবার গণনার সকাল থেকেই উদ্বেগে ছিলেন তাঁরা। তিনটি পঞ্চায়েতে জয় পেতে রীতিমতো বেগ পায় শাসক দল। তার মধ্যে বড়া পঞ্চায়েতে ১৮টি আসনের মধ্যে এ বার শাসক দল পেয়েছে ৯টি। বিজেপি ৮টি, সিপিএম ১টি। বাসুবাটি পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল সাতটি, বিজেপি চারটি এবং নির্দল দু’টি পেয়েছে। আনন্দনগর পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে শাসক দল সাতটিতে জয়ী হয়েছে। চারটি আসন পেয়েছে সিপিএম। নির্দল একটি। এই তিন পঞ্চায়েতে বিরোধীরা যদি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে, তা হলে কী হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক তৃণমূল নেতা। হেরেছেন তাপসীর বাবা মনোরঞ্জন মালিক। ৮২ হাজার ভোটের মধ্যে তিনি পেয়েছেন মাত্র ১২০২টি ভোট।

চিন্তা বাড়ল সিপিএমেরও। গত বার পাঁচটি পঞ্চায়েত তাদের ছিল। এ বার ১৬টি আসনে জিতেছে তারা। সিপিএম নেতা পাঁচকড়ি দাস এই অবস্থার জন্য তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’কে দুষেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শাসক দলের একতরফা সন্ত্রাসের কাছে এ বার সারা পশ্চিমবঙ্গে কোনও দলই কিছু করতে পারেনি। সিঙ্গুরও তার বাইরে নয়।’’ অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement