তাণ্ডব: বর্ধমান শহরে কার্জন গেট চত্বরে এক সরকারি কর্মীকে মার তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের। পরিচয়পত্র দেখিয়েও মেলেনি ছাড়। ছবি: উদিত সিংহ
বাইরে কড়া নজরদারি। মশা গলারও জো নেই। কিন্তু ‘মশারির ফাঁক’ গলে কী করে যেন মহকুমাশাসকের দফতরে সুড়ুৎ করে ঢুকে পড়েছিল গোটাদু’য়েক ‘মশা’। বিজেপির জেলা পরিষদের প্রার্থী বিলাস লক্ষ্মণ এবং তাঁর প্রস্তাবক তপন মণ্ডল। সবার চোখ এড়িয়ে সরকারি আধিকারিকের কাছে পৌঁছে দু’জনেই ভেবেছিলেন, আর তাঁদের আটকায় কে?
কিন্তু তৃণমূলে যে এমন ‘বাঘমামা’ রয়েছেন, তা বুঝে উঠতে পারেননি দু’জনই। বিলাসকে আটকানোর আর কোনও উপায় নেই ভেবে তৃণমূল নেতারা যখন হাত কামড়াচ্ছেন, তখন এগিয়ে এলেন মীর সামসুদ্দিন ওরফে চঞ্চল। ১৪৪ ধারার লক্ষণরেখা হেলায় টপকে আধিকারিক এবং সংবাদমাধ্যমের চোখের সামনেই বিলাসবাবুর জামার কলার-এ গিয়ে পড়ল তাঁর থাবা। তপন মণ্ডলকেও পাশের আদালত চত্বরে নিয়ে দেওয়া হল গণধোলাই। চঞ্চলের এ হেন ‘পরাক্রম’-এ হুগলির আরামবাগে ‘মান বাঁচল’ শাসকদলের!
আর এই ‘কীর্তি’-র ইনামও হাতে নাতে পেয়ে গেলেন চঞ্চল। গত ৩ এপ্রিলের এই ঘটনার পরেই এলাকার তৃণমূল নেতারা চঞ্চলের বৌদি রেহানা বেগমকে আরামবাগে তিরোল পঞ্চায়েতের নৈসারই গ্রামের ৩ নম্বর সংসদে টিকিট দিয়ে দিয়েছেন। সোমবারই মহিলা সংরক্ষিত ওই বুথে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রেহানা। আগে ওই সংসদে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন সুজাহান বেগম। কিন্তু দেওর-ভাগ্যে শেষবেলায় শিকে ছিঁড়েছে রেহানারই। কারণ, দল চায় এরকমই দাপট দেখিয়ে ‘উন্নয়ন’ চালান চঞ্চল। আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ও জেলা যুব নেতা কমল কুশারি বলেন, “যাঁরা দলের একনিষ্ঠ কর্মী, তাঁরা দলের সম্পদ। তাঁরাই পঞ্চায়েতে থাকলে গ্রাম উন্নয়নের কাজ ভাল হবে।”
খুশি চঞ্চলও। তিনি বলেন, “ভাল কাজ করেই দলের এই পুরস্কার পেয়েছি। বিজেপিকে এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়ব না। তা করেও দেখাচ্ছি।”
চঞ্চলের নামে অবশ্য মামলা ঠুকেছে বিজেপি। ৫ এপ্রিল বিজেপি চঞ্চল-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মারধর, নির্বাচন সংক্রান্ত কাগজপত্রের ব্যাগ ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেছে আরামবাগ থানায়। চঞ্চলকে অবশ্য ধরেনি পুলিশ। তারা জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।