কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের ফলে আজ, সোমবার দ্বিতীয় দফায় পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে। তার আগে নতুন করে প্রশ্ন তুলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তায় যাচ্ছে বিরোধী বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। শাসক তৃণমূলের অভিমত, বিরোধীরা আসলে ভোটটাই বানচাল করতে চায়। তাই তারা ফের অজুহাত খাড়া করে সংঘাতের নয়া কৌশল নিচ্ছে।
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কমিশন শনিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, সোমবার বেলা ১১টা থেকে ৩টে ফের মনোনয়ন নেওয়া হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির মনোনয়ন বিডিও এবং জেলা পরিষদের মনোনয়ন এসডিও-র দফতরে জমা নেওয়াই সাধারণ নিয়ম। কিন্তু আগের দফায় মনোনয়ন পর্বে বিরোধীরা বার বার কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ করেছিল, সন্ত্রাসের জেরে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারছেন না। তখন কমিশন জানিয়েছিল, বিডিও-র দফতরে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির মনোনয়ন জমা দিতে বাধা পেলে এসডিও-র দফতরেও তা জমা দেওয়া যাবে। কিন্তু শনিবারের নতুন বিজ্ঞপ্তিতে এই মর্মে কমিশন কোনও নির্দেশ দেয়নি। কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, আদালত তাদের বাধাহীন ভাবে মনোনয়ন জমার ব্যবস্থা করতে বলেছে। কোথায় মনোনয়ন জমা হবে, তা নিয়ে আলাদা নির্দেশ দেয়নি। নিয়মমাফিক যা হয়, সেটাই প্রযোজ্য।
এই নিয়েই অসন্তুষ্ট বিরোধীরা। বিজেপি শনিবারই আদালতে যাওয়ার কৌশল খুঁজতে বৈঠক করেছিল। রবিবার সেই পরিকল্পনা জোরালো হয়েছে। সিপিএম নেতা রবীন দেব, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এবং কংগ্রেস নেতা রবিউল ইসলাম এ দিন পৃথক ভাবে কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে দাবি করেছেন, বিডিও-র দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা পেলে এস়ডিও-র দফতরে তা জমা দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। একই দাবিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহকে চিঠি দিয়েছে বিজেপি। তাদের আরও দাবি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য চার ঘণ্টা অপ্রতুল সময়। রবীনবাবু বলেন, ‘‘কমিশনার আমাদের দাবি শুনেছেন। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।’’ এই প্রেক্ষিতে আদালতে যাওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছে সিপিএমও। শমীকবাবুর কথায়, ‘‘মনোনয়ন সোমবার জমা দেওয়া হবে। কিন্তু আদালতে যাওয়ার রাস্তাও আমরা খোলা রাখছি।’’
তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য মনে করেন, নির্বাচনী লড়াইতে পরাজয় অনিবার্য জেনেই বিরোধীরা ময়দান থেকে পালাতে চাইছে। দলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘বিরোধীরা আদালতে গিয়েছিল। কোর্টের নির্দেশে মনোনয়নের দিন ফের বাড়ল। এখন নির্বাচনী বিধিমাফিক যা হওয়া উচিত, সেটাই হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আশঙ্কার বাতাবরণ তৈরি করে এই ধরনের অযৌক্তিক কথা বলা অভিসন্ধিমূলক।’’