জেলা পরিষদের মোট ৮২৫ টি আসনের মধ্যে ২০৪ টিতে আপাতত বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে তৃণমূল। যদিও আদালতের নির্দেশে এখনই সেই ফল ঘোষণা করা যাবে না। বাকি যে ৬২১টিতে সোমবার ভোট হবে তারও ৩৭৫ টিতেই জিততে চলেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এবিপি আনন্দ- সি ভোটার-এর সর্বশেষ জনমত সমীক্ষায় এই সম্ভাবনা সামনে এসেছে। প্রধান বিরোধী হিসাবে বিজেপি ৬২১টির মধ্যে পেতে পারে ১৭৬ টি আসন, বাম ৫৯, কংগ্রেস ৯ এবং অন্যান্যরা ২টি।
সমীক্ষা আরও বলছে, যদি সব আসনেই লড়াই হত তাহলেও এই প্রবণতা বদলাত না। সেক্ষেত্রে মোট ৮২৫ আসনের মধ্যে তৃণমূল পেত ৫২০, বিজেপি ১৮৭, বাম ৮৪ এবং কংগ্রেস ৩৩।
এইধরনের জনমত সমীক্ষা একটি নির্দিষ্ট সময়কালে নমুনা ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে। সবসময় যে তা প্রকৃত ফলের সঙ্গে মিলে যায়, এমন নয়। সমীক্ষা ও বাস্তবে বিস্তর ফারাকও হয়ে যায়। তবে সম্ভাব্য ফলাফলের ইঙ্গিত হিসাবে এই পদ্ধতি সাধারণভাবে স্বীকৃত।
শাসক এবং বিরোধী কোনওপক্ষই এই সমীক্ষা সম্পর্কে মতামত দিতে চাননি। তবে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ধরে নেওয়া যায় সমীক্ষার ফল বাস্তবের সঙ্গে মিলে যাবে, তাহলে বিপুল ‘জয়’ নিশ্চিত জেনেও মনোনয়নপর্ব থেকে শাসকদল এত সন্ত্রাস চালাল কেন? শাসকদের পাল্টা যুক্তি, সন্ত্রাসের বলি অধিকাংশই তৃণমূলের। তাই হিংসায় মদত কারা দিয়েছে তা পরিষ্কার।
কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া একদিনে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট যে সম্ভব নয়, জনমত সমীক্ষায় সে বিষয়ে মতামত কিন্তু স্পষ্ট। ৬৫% লোক মনে করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট অবাধ হবে না। এমনকী বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের তত্ত্বাবধানেও ভোট সুষ্ঠু হবে বলে মনে করেন না ৫৩% মানুষ।
‘উন্নয়ন’ কথাটি এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। সমীক্ষা বলছে, ৩৪% মানুষ মনে করেন, উন্নয়ন প্রকৃতপক্ষে ভোটের ফল নির্ধারনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়ন যে হয়েছে সেটাও বিশ্বাস করেন ৫৯% মানুষ।
এর আগে আরও দুটি সমীক্ষা করেছিল এবিপি আনন্দ- সি ভোটর। ওই দুটি সমীক্ষায় জেলা পরিষদে মোট ৮২৫ আসনের মধ্যে তৃণমূলের আসন সংখ্যায় খুব বেশি হেরফের ছিল না। প্রথম সমীক্ষায় তৃণমূলকে দেওয়া হয়েছিল ৫৩২, দ্বিতীয় দফায় ৫৩৮। এবার তৃতীয় ও সর্বশেষ দফায় যে সমীক্ষা হয়েছে তার আগে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল ‘জিতে’ নিয়েছে ২০৪টি আসন। কিন্তু তারপরেও সমীক্ষা বলছে, যদি ৮২৫টিতেই ভোট হত তাহলে তৃণমূলের আসন দ্বিতীয় দফার তুলনায় ১৮ টি কমে যেত। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দফার তুলনায় বিজেপির আসন বাড়ত ২০ টি, বামের ১১টি। কংগ্রেসের অবশ্য কমে যেত ১০টি আসন।