মনোনয়ন-পর্ব থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে অশান্তি। জেলায় জেলায় সিপিএমের স্থানীয় কর্মীরা তো বটেই, আক্রান্ত হয়েছেন বাসুদেব আচারিয়া, রামচন্দ্র ডোমের মতো প্রাক্তন সাংসদ। রাজ্য জুড়ে এমন আক্রমণের মুখে এখনও মুখ খোলেননি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে বাংলার এই পরিস্থিতির কথা জেনে উদ্বিগ্ন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তাঁর মতে, ত্রিপুরায় শাসক বিজেপি এবং বাংলায় তৃণমূল যা করছে, দু’টোই গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণ।
বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকেই ত্রিপুরার নানা প্রান্তে বাম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ আসছে। ভাঙচুর হচ্ছে দলীয় কার্যালয়, বাড়ি বা দোকানপাট। আর বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের আগেই তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষিতেই মানিকবাবুর প্রশ্ন, ‘‘বাংলায় ফাঁকা মাঠে ডজন ডজন গোল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে! অথচ সরকার এবং শাসক দল বলছে, তারা উন্নয়নের কাজ করেছে বিস্তর। মানুষও তাদের দু’হাত তুলে সমর্থন করেছেন। তা হলে ভোটে বিরোধীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিতে এত বাধা কেন?’’ ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতার আরও মন্তব্য, ‘‘শাসক দলের কাজকর্মেই প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে, তা হলে কি তাদের বক্তব্য এবং বাস্তবের মধ্যে ফারাক আছে?’’
ত্রিপুরার বিধানসভার ভিতরে-বাইরে বিরোধী বামেরা জানিয়ে দিয়েছে, নতুন বিজেপি সরকারের ভাল কাজের পাশে তারা থাকবে। গঠনমূলক সমালোচনাও জারি থাকবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ভোটের ফলে আমাদের পরাজয় এবং বিজেপির জয় তো আমরা স্বীকার করে নিয়েছি। আমাদের অবস্থানও স্পষ্ট করে দিয়েছি। তার পরেও রোজই কোথাও না কোথাও হামলা চলছে। এখনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি ‘চলো পাল্টাই’ হয়েছিল এ সব করার জন্যই?’’ বিধানসভা ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণেই ত্রিপুরার নতুন রাজ্য সরকারের মন দেওয়া উচিত বলে বিরোধী দলনেতার দাবি। সেই সঙ্গেই তিনি বলছেন, ‘‘দুই রাজ্যেই যা ঘটনা ঘটছে, তাতে আক্রান্ত হচ্ছে গণতন্ত্রই।’’