তিন দফার বদলে একদিনে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ায় খুশি রাজ্য সরকার। খুশি রাজ্যের অর্থ দফতরও। কারণ, দফা কমার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি ব্যবস্থার জন্য পরিকল্পিত খরচও কমতে চলেছে রাজ্য সরকারি সূত্রের খবর। গত ৩১ মার্চ তিন দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের নিরাপত্তার উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে কত খরচ হতে পারে, তার একটা হিসাব তৈরি করেছিল পুলিশ বিভাগ। সূত্রের খবর, গোটা ভোটপর্বে পুলিশি বন্দোবস্তের খরচ হিসেব করে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার প্রস্তাব নবান্নে পাঠিয়েছিল পুলিশ বিভাগ।
সম্প্রতি নতুন করে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে হয়েছে কমিশনকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এক দফাতেই, ১৪ মে ভোট হবে রাজ্যের ২০টি জেলায়। নতুন করে পুলিশি বন্দোবস্তের পরিকল্পনা শুরু করেছে প্রশাসন। সেই কাজ করতে গিয়েই অর্থ দফতরকে ‘খুশি’ করেছে পুলিশ বিভাগ। রাজ্য পুলিশের কর্তাদের অনেকেই মনে করছেন, নয়া নির্ঘণ্টে আগের হিসাব মতো ১৭০ কোটি টাকার পরিবর্তে খরচ প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে।
প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, তিন দফায় ভোট হলে পুলিশকর্মীদের এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পাঠাতে হত। এই সব ক্ষেত্রে প্রথামাফিক তাঁদের দিতে হয় প্রাত্যহিক ভাতা ও ভ্রমণ খরচ। বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীদের খাবার, থাকার ব্যবস্থা করতে হয় সব জায়গায়। তা ছাড়াও বাহিনী এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে প্রচুর গাড়ির ব্যবস্থা করতে হয়। প্রয়োজনে ট্রেনের কামরাও ভাড়া করা হয় কখনও কখনও। সব মিলিয়ে অর্থ দফতরের কাছে ১৬৭ কোটি টাকার কিছু বেশি অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব জানিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন।
অর্থ দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনে এই খাতে যে খরচ করতে হয় তার পুরোটাই কেন্দ্রের নির্বাচনী তহবিল থেকে ফেরত পায় রাজ্য। বিধানসভা নির্বাচনে পুলিশি ব্যবস্থা বাবদ খরচের খানিকটা অংশ ফেরত আসে রাজ্যের কাছে। কিন্তু পুরসভা বা পঞ্চায়েত নির্বাচনের খরচের পুরোটা রাজ্য সরকারকেই বহন করতে হয়। প্রশাসনিক খরচের জন্য চিহ্নিত তহবিল থেকেই রাজ্য এই খরচ করে। রাজ্যের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে শুধু পুলিশি বন্দোবস্তের জন্য খরচের কিছুটা কমানো গেলেও আখেরে রক্ষা পাবে রাজ্যের কোষাগার। অবশ্য ভিন রাজ্যের পুলিশ পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলে, সে বাবদও খরচ হবে। তবে তা তিন দফার ভোটের খরচের মতো হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।