মারমুখী: বিজেপির মহিলা কর্মীদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সোমবার রাতে জানিয়েছিল মনোনয়নের সময় এক দিন বাড়ানো হল। বিভিন্ন বিরোধী দল যখন আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছে, তখন কমিশন আবার নতুন নির্দেশ জারি করে আগের নির্দেশিকা বাতিল করেছে! রাতের এবং সকালের দু’রকম নির্দেশ নিয়ে দিনভর আদালতে টানাপড়েন চলেছে। আর তার মধ্যেই কিছু জায়গায় ফের অভিযোগ এসেছে বিরোধীদের উপরে হামলার। দিনভর তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে কমিশনের দফতরের সামনেও।
মনোনয়ন ঘিরে অশান্তিতে এ দিন রক্তাক্ত হয়েছেন রানিনগরের কংগ্রেস বিধায়ক ফিরোজা বেগম। এই নিয়ে মুর্শিদাবাদে পরপর দু’দিন দুই বিধায়কের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল। কংগ্রেস প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে খবর পেয়ে বিডিও দফতরের দিকে যাচ্ছিলেন ফিরোজা। তখনই পথে তাঁর গাড়ি আটকে শাসক দলের বাহিনী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর হয়েছে তাঁর গাড়িও। গোলমালের খবর পেয়ে বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে গেলে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূলের ধস্তাধস্তি বাধে। তার পরে সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা। আর তাঁর দলের দুষ্কৃতীরা এক জন শিক্ষিকা এবং সংখ্যালঘু, মহিলা বিধায়কের উপরে আক্রমণ করছে। প্রতিবাদের কোনও ভাষা নেই!’’ ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে বিজেপির মহিলা প্রার্থী সুমিতা হাঁসদার বাড়িতে চ়ড়াও হয়ে তাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে।
ঘোষণা করেও মনোনয়ন না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাম কর্মীরা এ দিন নিমতৌড়িতে হলদিয়া-মেচেদা সড়কে বিক্ষোভ দেখান। আর বিক্ষোভ হবে আঁচ করেই এ দিন সকাল থেকে কার্যত ‘দুর্গে’ পরিণত করা হয় সরোজিনী নাইডু সরণির কমিশন দফতর। সেই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল তো দূর অস্ত! সাধারণ মানুষকে তাঁদের ফ্ল্যাট, অফিস, দোকানেও যেতে দেওয়া হয়নি। তবু দফায় দফায় বিক্ষোভ চলেছে বিরোধী দলগুলির।
বাম মহিলা সংগঠনগুলির বিক্ষোভের পরেই তিন দফায় বিক্ষোভ দেখান হাওড়া জেলা বামফ্রন্টের কর্মী-সমর্থকেরা। তিন বারই তাঁদের গ্রেফতার করে লালবাজার নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের বিজেপির মহিলা মোর্চা ঝাঁটা হাতে বিক্ষোভ দেখাতে আসে। তখন চলছিল কংগ্রেসের ধর্নাও। গেরুয়ার সঙ্গেই মিশে যায় হাত চিহ্নের তেরঙা পতাকা। ঝাঁটা হাতে পুলিশকে মারতেও দেখা যায় বিজেপি মহিলা মোর্চার কর্মীদের। কংগ্রেস এবং বিজেপি-কে একই সঙ্গে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে যুব লিগের কর্মী-সমর্থকেরা এসে পুলিশ ও কমিশনের কর্মীদের চুড়ি পরানোর চেষ্টা করেন! তাঁদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় বৌবাজার থানায়।