প্রদর্শনীতে রেখা ভরদ্বাজ। — নিজস্ব চিত্র
বাংলার গ্রাম থেকে বলিউডের দুয়ারে। হস্তশিল্পের উড়ানের সাক্ষী রইল মুম্বই।
কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ললিতকলা অ্যাকাডেমির সহায়তায়, চালচিত্র অ্যাকাডেমির উদ্যোগে মুম্বইয়ের গোরেগাঁওতে শনিবার হয়ে গেল বাংলার নানা এলাকার হস্তশিল্পের প্রদর্শনী। ডোকরা, পটচিত্র, আল্পনার মতো সাবেক হস্তশিল্পই নয়, এর সঙ্গে ছিল ললিতকলা কেন্দ্রের শিল্পীদের তৈরি আধুনিক গ্রাফিক্সের কাজ, সেরামিকের কাজও। উদ্যোক্তাদের দাবি, ‘ট্রান্সফরমেশন’ নামে এই প্রদর্শনীতে বাংলার হস্তশিল্পের যাত্রাই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। আর সেই চেষ্টা যাতে বিনোদন নগরীর নজরে আসে, সে জন্যই স্থান হিসেবে মুম্বইকে বেছে নেওয়া। প্রদর্শনীতে আসেন চিত্র পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজের স্ত্রী, সঙ্গীতশিল্পী রেখা ভরদ্বাজ।
প্রদর্শনীতে কৃষ্ণনগরের আলপনা, বাঁকুড়ার বিকনা গ্রামের ডোকরা, টেরাকোটা যেমন ছিল, তেমনই ছিল মেদিনীপুরের পিংলার নয়া গ্রামের পটের কাজ, পটাশপুরের গালার পুতুল, এমনকী পুরুলিয়ার আদিবাসী পটুয়াদের তৈরি পটচিত্রও। কেবল দক্ষিণবঙ্গই নয়, ছিল উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডির বিখ্যাত কাঠের মুখোশ বা ‘মুখা’-ও। বস্তুত, বলিউডি অনেক ছবির নির্মাণ, শিল্প-নির্দেশনার ক্ষেত্রেই এখন হস্তশিল্পকে গুরুত্ব দেওয়া ললিতকলা অ্যাকাডেমির কলকাতা শাখার স্টুডিও-ইন-চার্জ সতীশ চন্দের মতে, গ্রাম-বাংলার শিল্পীদের কাজ যাতে বলিউডের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়, সে জন্যই এই উদ্যোগ। চালচিত্র অ্যাকাডেমির তরফে মৃণাল মণ্ডল বলেন, ‘‘উৎকর্ষের প্রয়োজনেই সাবেক শিল্প ও আধুনিক শিল্পের এক মঞ্চে এসে কাজ করা প্রয়োজন। আমরা সে চেষ্টাই করে চলেছি।’’
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, মুম্বইতে বাংলার গ্রামের শিল্পীদের হস্তশিল্পের নিদর্শন দেখে সকলেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। এমনকী, রেখা ভরদ্বাজও চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রক্রিয়ায় বাংলার হস্তশিল্পীদের যুক্ত করারও ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।