—ফাইল চিত্র।
পেঁয়াজের দামের দাউ দাউ আগুন এখনও নেভেনি। তার মধ্যেই দাম চড়ছে আলুর। পাইকারি বাজারেই জ্যোতি এবং চন্দ্রমুখী আলুর দর চলছে যথাক্রমে ১৯ এবং ২৩ টাকা কেজি। ফলে সাধারণ বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। রাজ্য সরকারের দাবি, জানুয়ারির প্রথম-দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে। এখন সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রে ১৭ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করা হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা জানান, বাজারে বাজারে এখনই ফের অভিযান শুরু করতে হবে।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্য, জোগানের থেকে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর ৬০ লক্ষ টন আলু দরকার হয় রাজ্যে। উৎপাদন হয় কমবেশি এক কোটি ২০ লক্ষ টন। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। এ রাজ্যে শীতের আলুর বেশির ভাগটাই পাওয়া যায় মার্চ নাগাদ। তার আগে আলুর কিছু আগাম উৎপাদন হয় রাজ্য। বাকিটা আনা হয় পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশ থেকে। কিন্তু দুর্গাপুজো, কালীপুজোর আগে-পরে রাজ্যে বৃষ্টি হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবও পড়েছিল হুগলি-সহ আলু উৎপাদক বিভিন্ন জেলায়। ফলে আগাম উৎপাদনের আলু সে-ভাবে পাওয়া যায়নি। প্রাকৃতিক কারণে এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জেরে পঞ্জাব-উত্তরপ্রদেশ থেকেও আলুর জোগান তেমন নেই।
আরও পড়ুন: খুনের মামলায় মুকুলকে টানা দু’ঘণ্টা জেরা
কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এ বার হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা নভেম্বর থেকে বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর করেছিল। সেই আলু দিয়ে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চাহিদা অনায়াসে মেটানো যেত। কিন্তু সমান্তরাল জোগান না-আসায় সমস্যা হয়েছে।’’ দফতরের অন্য এক কর্তা জানান, উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পরিবহণে সমস্যা হচ্ছে। বাড়তি অর্থ খরচ করে আলু পাঠাতে পারছেন না অনেকেই। তবে জানুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে আধিকারিকদের মধ্যে। এই অবস্থায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের গড়া টাস্ক ফোর্স কতটা সক্রিয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল। টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে স্বীকার করছেন, কিছু দিন বাজারে অভিযান চালানো যায়নি। সেই অভিযান ফের শুরু করতে হবে। সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের গতিবিধি রুখতে নিরন্তর অভিযান চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ।