ছবি: পিটিআই।
সুযোগ এক বার হাতছাড়া হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবার সুযোগ তৈরি করতে চায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট!
স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বাংলা থেকে সংসদের দুই কক্ষে কোনও বাম প্রতিনিধি নেই। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে যেমনই আন্দোলন হোক না কেন, সংসদের ভিতরে বামেদের তেমন জোরালো কণ্ঠ পাওয়া যাচ্ছে না। এই সঙ্কট কালে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে আবার রাজ্যসভায় ফিরিয়ে আনতে চাইছে বঙ্গ সিপিএম। বাংলা থেকে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে এই লক্ষ্যপূরণে আগ্রহী তারা।
আর আড়াই মাসের মধ্যে বাংলা থেকে রাজ্যসভার পাঁচটি আসন খালি হবে। বিধানসভায় সংখ্যার নিরিখে চারটি আসনে তৃণমূলের সরাসরি জয় নিশ্চিত বলা যায়। কংগ্রেস ও বাম জোট বাঁধলে পঞ্চম আসনটি বিরোধীদের দিকে আসতে পারে। সেই আসনের জন্যই আলিমুদ্দিনের পছন্দ ইয়েচুরি। সিপিএমের যুক্তি, জাতীয় রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষিতে ইয়েচুরির মতো নেতাকে রাজ্যসভায় দরকার। তিনি এমন এক জন নেতা, বিরোধী সব দলের কাছে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা আছে। তবে তিনি এখনও দলের সাধারণ সম্পাদক, এই সাংগঠনিক যুক্তিতে একান্তই তাঁর সংসদ-যাত্রা আটকে গেলে দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে মহম্মদ সেলিমের মতো কোনও বক্তাকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার ভাবনা আছে বঙ্গ সিপিএমের। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের চার জনের পাশাপাশি ৬ বছর আগে পঞ্চম আসনটি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সিপিএমের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি এখন নির্দল।
আরও পড়ুন: বৈঠকে যাব না, ক্ষমতা থাকলে সরকার ভেঙে দেখাক: মমতা
শেষ দু’বার এ রাজ্য থেকে বিরোধী প্রার্থী হিসেবে রাজ্যসভায় গিয়েছেন কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। সিপিএম নেতৃত্বের মতে, পরিস্থিতি বিচার করলে এ বার সুযোগ পাওয়া উচিত তাঁদের। কংগ্রেসের তরফে সনিয়া ও রাহুল গাঁধী তিন বছর আগেই ইয়েচুরির জন্য রাজ্যসভায় সমর্থন দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে দলে সিদ্ধান্ত তখনও পাকা হয়নি বলে সিপিএম সেই প্রস্তাব মানেনি। তা ছাড়া, দু’বারের বেশি কাউকে রাজ্যসভায় না পাঠানোই সিপিএমে রীতি। তা হলে এখন কী হবে? দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু বিশেষ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিজেপির মোকাবিলায় বিরোধীদের তরফে ইয়েচুরিই উপযুক্ত প্রার্থী হতে পারেন।’’ শেষ পর্যন্ত ইয়েচুরিই প্রার্থী হলে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব হাতে রাখার বিষয়ে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসে।
প্রদেশ কংগ্রেসের মধ্যে থেকে অবশ্য রাজ্যসভার আসনের জন্য আগ্রহী কিছু নাম আছে। কিন্তু কংগ্রেসে হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও আলোচনা এখনও না হলেও কংগ্রেস নেতৃত্বের ধারণা, বিরোধী ২০ দলের সমন্বয় রেখে যে ভাবে এগোতে চাইছেন সনিয়া, তাতে ইয়েচুরির নাম রাজ্যসভার জন্য এলে তাঁর আপত্তি করার কথা নয়।