বিপদ বড়, বাংলার বার্তা কারাটদের

সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি ছিল, বিজেপি সরকার যা করছে, তাকে আধিপত্যবাদ বলা যেতেই পারে। কিন্তু তাকে এখনও ফ্যাসিবাদের লক্ষণ বলার সময় আসেনি। সুভাষ-স্মরণের মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার কারাটদের সেই যুক্তিকেই কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ষীয়ান সদস্য শ্যামল চক্রবর্তী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০৭:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সৈফুদ্দিন চৌধুরীর পরে সুভাষ চক্রবর্তী। প্রয়াত আর এক নেতার স্মরণকে উপলক্ষ করে প্রকাশ কারাটদের যুক্তিকে ফের বিঁধল বঙ্গ সিপিএম!

Advertisement

প্রাক্তন মন্ত্রী ও ডাকসাইটে সংগঠক সুভাষবাবুর মৃত্যুদিনে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও প্রসারিত করারই ডাক দিয়েছেন সুভাষপন্থী নেতারা। সেই মঞ্চ থেকেই নাম না করে নিশানা করা হয়েছে কারাটদের ‘একলা চলা’র নীতিকে। ইউপিএ-র বদলে এনডিএ-র ক্ষমতায় আসা যে নিছক একটি সরকারের বদল নয়, সিপিএম পলিটব্যুরোকে চিঠি লিখে তা মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব। তাঁর গত বছরের সেই চিঠি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপত্রে প্রকাশ করে কারাট জবাব দিয়েছিলেন। সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি ছিল, বিজেপি সরকার যা করছে, তাকে আধিপত্যবাদ বলা যেতেই পারে। কিন্তু তাকে এখনও ফ্যাসিবাদের লক্ষণ বলার সময় আসেনি। সুভাষ-স্মরণের মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার কারাটদের সেই যুক্তিকেই কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ষীয়ান সদস্য শ্যামল চক্রবর্তী।

ইতিহাসবিদ হাবিবের সুরেই শ্যামলবাবু এ দিন বলেন, ইউপিএ চলে গিয়ে এনডিএ আসা দলীয় পরিভাষায় শুধু ‘বুর্জোয়া সরকারের বদল’ নয়। বিজেপি এবং আরএসএস দেশ জুড়ে যা করছে, তা ভয়ঙ্কর! একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিজেপি-র গতি এখন অপ্রতিরোধ্য। শ্যামলবাবুর কথায়, ‘‘কেউ কেউ এখন বিতর্ক করছেন, একে ফ্যাসিবাদ বলা যায় কি না। বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সেই অর্থে ফ্যাসিবাদ যে দিন সত্যিই আসবে, সে দিন বিতর্ক করার মতো এক জন কমিউনিস্টও দেশে বেঁচে থাকবেন না!’’ হাবিবকে পাল্টা দিতে গিয়ে দেশ জু়ড়ে সমালোচিত হয়েছিলেন কারাট। শ্যামলবাবুরা এ দিন সেই প্রসঙ্গ সামনে এনেই বিজেপি-কে প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করে লড়াই জোরালো করার কথা বলেছেন।

Advertisement

প্রবীণ বাম নেতাদের কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আটের দশকে সিপিএমের একটি রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী মঞ্চে দলের কেন্দ্রীয় নেতা বি টি রণদিভে বলেছিলেন, বাংলার কমরেডরা সাম্প্রদায়িকতার বিপদ বুঝতে পারছেন না। কেরলের বাম কর্মীরা সেই বিপদ বুঝে লড়াই করছেন, এই ছিল রণদিভের যুক্তি। তাঁর সেই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল বিস্তর। ভিন্ন পরিস্থিতিতে বাংলা আর কেরলের অবস্থান এখন উল্টো হয়ে গিয়েছে সিপিএমে! রণদিভের পরামর্শই যেন কারাটদের মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে শ্যামলবাবুদের তরফে!

দমদমের রবীন্দ্র ভবনে এ দিনের অনুষ্ঠানে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় আসতে পারেননি অসুস্থতার কারণে। সুভাষ-জায়া রমলা চক্রবর্তীর মাধ্যমে তিনি বার্তা পাঠিয়েছিলেন, আর কোনও দিন সুভাষের অনুষ্ঠানে তাঁর আসা হবে কি না, সংশয় হচ্ছে। যে মন্তব্য আবেগাপ্লুত করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement