অধীর চৌধুরী।—ছবি সংগৃহীত।
নতুন সভাপতি দায়িত্ব নেওয়ার পরে এ বার সাংগঠনিক রদবদলের পথে যাচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস। নতুন পদাধিকারী ঠিক করার পাশাপাশিই দলত্যাগীদের ফেরানো ও তাঁদের কাজে লাগানো নিয়েও ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে দলে। আর অন্য দিকে, বামেদের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপও শুরু হয়ে গিয়েছে।
সোমেন মিত্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন চার জনকে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়াও, সমন্বয় কমিটি, ইস্তাহার কমিটির মতো নানা দায়িত্বে বিভিন্ন নেতা ছিলেন। সে সবই এখন অতীত হয়ে যেতে চলেছে। এআইসিসি-র বিজ্ঞপ্তিতে এ বার শুধুই প্রয়াত সোমেনবাবুর জায়গায় অধীর চৌধুরীকে প্রদেশ সভাপতি নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। নিজে দায়িত্ব নেওয়ার পরে এআইসিসি-র সবুজ সঙ্কেত নিয়ে অধীরবাবু নতুন করে সংগঠন সাজানোর ভাবনা শুরু করেছেন। কংগ্রেসে সচরাচর সভাপতি বদল হলে পুরনো কমিটিও বদলে যায়। সূত্রের খবর, অধীরবাবু ভার নেওয়ার পরেও প্রদেশ কংগ্রেসে পুরনো পদের আর অস্তিত্ব থাকবে না।
দায়িত্ব নিয়েই দলত্যাগীদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অধীরবাবু। কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে যে বিধায়কেরা তৃণমূল বা বিজেপিতে গিয়েছেন, তাঁদের ফেরানোর জন্য যোগাযোগ করা হবে কি না, তা ঠিক করার আগে সংশ্লিষ্ট জেলা সভাপতিদের মতামত নিতে চান অধীরবাবু। তাঁর নিজের জেলা মুর্শিদাবাদে হুমায়ুন কবীর কংগ্রেস ছেড়ে নানা দল ঘুরে কংগ্রেসে ফিরেছিলেন, ‘আকাঙ্ক্ষা’ পূরণ না হওয়ায় আবার ছেড়ে গিয়েছেন! এই উদাহরণ মাথায় রেখে দলত্যাগী বিধায়কদের জন্য খোলা ময়দান ছাড়তে চান না নতুন সভাপতি। শীঘ্রই জেলা সভাপতিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করবেন অধীরবাবু। জেলা সভাপতিদের কাজ নিয়ে বক্তব্য এবং দলত্যাগী-সহ নানা বিষয়ে মত নেওয়া হবে সেখানে। তার পরে জেলা স্তরে রদবদলের ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা হবে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। অধীরবাবু শুক্রবার বলেছেন, ‘‘ভোটের আগে কোন জেলায় দলের কী অবস্থা, নেতৃত্বের কার কী বক্তব্য, জেলা সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে বুঝতে চাই।’’
আরও পড়ুন: গৌরবের বদলে বাংলায় জিতিন
সাংগঠনিক রদবদলের আগেই বামেদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য কমিটি গড়ে দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। সেই কমিটির প্রধান আব্দুল মান্নান এ দিনই কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেবও মান্নানের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমেনবাবু যেখানে ছেড়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে সামনে এগোনোর জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব আলোচনায় বসতে চান। প্রথম বৈঠকে যাতে অধীরবাবু এবং সূর্যবাবু থাকতে পারেন, তার চেষ্টা হচ্ছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমও বলেছেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট করতে হবে। অধীরবাবু সেই কাজ আগে করেছেন। লোকসভায় জোট না হওয়ায় শুধু আমাদের নয়, বাংলারও ক্ষতি হয়েছে, বিজেপি বেশি আসন পেয়েছে।’’
আরও পড়ুন: উপনির্বাচন চাই না,সর্বদল ঐক্য কেরলে