State News

দল এগোচ্ছে, মোদীকে ছবি দেখাল বিজেপি

রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৫
Share:

ছবি: পিটিআই।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর)-এর বিরুদ্ধে টানা আন্দোলন চলছে রাজ্যে। আবার সিএএ-র পক্ষে পথে নামছে বিজেপি। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে গিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতারা দাবি করে এলেন, তাঁদের সভা, মিছিলেই বেশি লোক হচ্ছে। নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে কয়েকটি মিছিলের ছবিও প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন তাঁরা। রাজভবনে মোদীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলেন, এখানকার আন্দোলন-ঝামেলার কী পরিস্থিতি। বললাম, এত দিন দিদিমণি এগোচ্ছিলেন। এখন পিছোচ্ছেন। এখন আমরা এগোচ্ছি।’’

Advertisement

এ দিন রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। সেখানে ছিলেন দিলীপবাবু, দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ, রাজ্যের পাঁচ জন সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ। বৈঠকের পরে বেরিয়ে দিলীপবাবু প্রথমে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা কিছু হয়নি। মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎ। চা-সিঙাড়া খেলাম। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হল।’’ এর পরেই দিলীপবাবু দাবি করেন, তাঁরা মোদীকে জানিয়েছেন, মমতাকে পিছনে ফেলে এখন এ রাজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। দিলীপবাবুর আরও দাবি, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, সিএএ-র সমর্থনে দলের আন্দোলন শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি যাওয়া হচ্ছে। অন্তত এক কোটি মানুষের কাছে গিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা সিএএ-র গুরুত্ব বোঝাবেন। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের ওই জনসম্পর্কের পরেই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি পাল্টে যাবে।’’ বিজেপি সূত্রের খবর, দলীয় নেতৃত্ব মোদীকে বলেছেন, সিএএ বিরোধী আন্দোলনে ভিড় করছেন ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ এবং ‘শহুরে নকশালরা’। সক্রিয় হচ্ছে মাওবাদীরাও।

মমতা-মোদী সাক্ষাৎকে কটাক্ষ করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর দিল্লি যাওয়ার সাহস নেই। তাই এখানেই সৌজন্য দেখিয়েছেন। আর তৃতীয়-চতুর্থ ফ্রন্ট এবং বিরোধী ঐক্যের ব্যাপারটাও এখন আর নেই। এখন বিরোধীরা নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে লড়ছেন। মমতাও মাসখানেক হেঁটে বুঝতে পেরেছেন, বাংলার মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। তাই এখন অস্তিত্ব বাঁচাতে প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।’’ পরে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু ভোট বাঁচাতে সিএএ বিরোধী ধর্নামঞ্চে যাচ্ছেন। আর তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বাঁচাতে মোদীজির কাছে যাচ্ছেন।’’ মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পরে মমতা জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সিএএ, এনআরসি বিরোধিতার কথা জানিয়ে এসেছেন। এ বিষয়ে দিলীপবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিএএ নিয়ে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এ বার মানুষ ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন।’’ এ দিন বিজেপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মোদীর বৈঠক যখন প্রায় শেষ, তখন স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে রাজভবনে পৌঁছন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘দিদি মোদীকে কী ভাবে অ্যালাও করলেন’, ব্যারিকেড ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিক্ষোভকারীরা

রাজ্য বিজেপি কি প্রধানমন্ত্রীকে কোনও উপহার দিয়েছে? দিলীপবাবু জানান, ‘‘না দিইনি। আমরা ওঁকে সাংসদ উপহার দিই। এ বার ১৮টা সাংসদ দিয়েছি। পরের বার আরও বেশি দেব।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, সামনে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন। এই সময়ে দিলীপবাবুর মোদীকে ‘রাজ্য’ উপহার দেওয়ার বদলে সাংসদ উপহার দেওয়ার কথা বলার মধ্যে কি কোনও ‘রহস্য’ লুকিয়ে আছে? চর্চা চলছে বিভিন্ন মহলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement