মুখ্যমন্ত্রীর ওই লিখিত বার্তায় থাকছে দুয়ারে সরকার শিবির নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। নিজস্ব চিত্র।
আজ থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবির। ষষ্ঠ দফার এই কর্মসূচিতে বড় আকর্ষণ হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের দুয়ারে সরকার শিবিরগুলি থেকে যে সমস্ত উপভোক্তারা পরিষেবা পাবেন, তাঁদের কাছে পৌঁছে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর এই লিখিত বার্তা। দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে মোবাইলের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আগেই করা হয়েছে। এ বার সেই তালিকায় সংযোজিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর লিখিত বার্তা। মুখ্যমন্ত্রীর ওই লিখিত বার্তায় থাকছে দুয়ারে সরকার শিবির নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। নিজের লিখিত বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২০ সাল থেকে দফায় দফায় রাজ্যের মানুষকে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে পাঁচ বার দুয়ারে সরকার শিবির হয়েছে। এই নিয়ে ষষ্ঠ বার তাঁর সরকার এই পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের দুয়ারে হাজির হচ্ছে। রাজ্যের সব পুরসভা এবং পঞ্চায়েত এলাকায়, এই পরিষেবা বুথ স্তরে দেওয়া হবে তা-ও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর ওই লিখিত বার্তায় জানানো হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ১ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য আবেদনগুলি গ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে শিবির থেকে পরিষেবা প্রদানের কাজ চালানো হবে। রাজ্য জুড়ে মোট যে ১ লক্ষ শিবির এই সময় চালানো হবে, তার ৭০ শতাংশ স্থায়ী জায়গায় হবে। বাকি শিবিরগুলি হবে ভ্রাম্যমান। মোট যে ৩৩ ধরনের পরিষেবা এ বার দুয়ারে সরকারের কর্মসূচিতে দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে চারটি পরিষেবা এই প্রথম যুক্ত করা হয়েছে। এগুলি হল, বিধবা পেনশন, মেধাশ্রী, ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড এবং বাংলা কৃষি, সেচ, যোজনার আওতায় ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প। ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পটি এ বারের বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে। সেটিকেও যুক্ত করা হয়েছে এ বারের শিবিরে।
আমজনতার সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর জন্য প্রতিটি শিবিরে একটি তালাবন্ধ বাক্স রাখা হবে। সেই বাক্সে জমা পড়া অভিযোগপত্রগুলি খতিয়ে দেখবেন নবান্নের আধিকারিকেরা। এ ভাবে মানুষের সমস্যার সরাসরি সমাধান করা যাবে বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা। শুক্রবার নবান্নে দুয়ারে সরকার নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই বৈঠকেই দুয়ারে সরকার সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে এই সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছে প্রশাসন। নবান্নের এক আধিকারিকের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি সরাসরি উপভোক্তারা হাতে পেলে সরকারের সঙ্গে রাজ্যের সাধারণ মানুষের সংযোগ তৈরি হবে। যার ফলে যে কোনও কর্মসূচি রূপায়ণে সুফল পাবে রাজ্য সরকার এবং উপভোক্তা দু’পক্ষই। তবে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছে, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ। রাজ্যের মানুষের সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগ গড়ে তুলতেই লিখিত বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পাঠানোর কথা ভেবেছে তাঁর প্রশাসন।