বেহালার শশীভূষণ মুখার্জি রোডের পুজো মণ্ডপ বাঙালির অতি প্রিয় খাবার ফুচকা দিয়ে সাজানো হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
বেহালার এই পুজোয় প্রতি বছরই নতুন নতুন আকর্ষণ থাকে। শশীভূষণ মুখার্জি রোডের দুর্গোৎসবের সঙ্গে পরিচিত কলকাতার পুজোপ্রেমীরা। সবাই এই পুজোকে বেহালা নূতন দলের পুজো বলেই জানে। এ বার তাদের মণ্ডপের ভাবনা ‘তুষ্টি’। শিল্পী অয়ন সাহা তাঁর ভাবনা ‘তুষ্টি’কে রূপদান করতে ব্যবহার করেছিলেন বাঙালির অতি প্রিয় খাবার ফুচকা। গত তিন মাসের পরিশ্রমে এই পুজা মণ্ডপকে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। মণ্ডপের প্রায় সর্বত্রই ফুচকা আর ফুচকা। পুজো মণ্ডপ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার পর থেকেই নতুন সমস্যা দেখা যায়। লোভনীয় ফুচকার সঙ্গে আলুমাখা, তেঁতুল জল না থাকলেও জিভে জল এসেছে অনেকের। তাঁরা খেয়ে ফেলেছেন কি না জানা না গেলেও খুলে নিয়েছেন অনেকেই।
অন্য পুজো মণ্ডপের মত দর্শক সাধারণের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি লাগানো হয়েছে। লেখা রয়েছে—মণ্ডপসজ্জায় হাত দেবেন না। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে সেই সব সতর্কবার্তা দেওয়ালেই রয়ে গিয়েছে। আগত দর্শনার্থীরা ইচ্ছামতো হাতের কাছে ফুচকা পেয়ে মণ্ডপের গা থেকে তা তুলে নিচ্ছেন।
তৃতীয়ার দিন থেকেই বিষয়টি নজরে এসেছিল বেহালা নূতন দলের উদ্যোক্তাদের। সিদ্ধান্ত হয়, পুজো কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা তো বটেই, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশও মণ্ডপে আগত দর্শনার্থীদের এ বিষয়ে সতর্ক করবেন। মণ্ডপ থেকে যাতে কোনওভাবেই ফুচকা খুলে না নেওয়া হয়, তার জন্য অনুরোধ জানাবেন। জানাচ্ছেনও। কিন্তু তাতে কাজ হলে তো! এই ক’দিনে অনেক দর্শককে হাতেনাতে ধরাও হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে মণ্ডপ থেকে খুলে নেওয়া ফুচকা। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি। নীচের দিক থাকা ফুচকার বেশিরভাগই মণ্ডপসজ্জা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। পুজো কমিটির আশঙ্কা, মণ্ডপে ব্যবহারের জন্য যে সব ফুচকা আনা হয়েছিল সেগুলি যাতে দিনের পর দিন একই রকম থাকে তার জন্য গায়ে বিভিন্ন রাসায়নিক লাগিনো হয়েছে। তাই কেউ যদি ওই ফুচকা মুখে দেয় তবে বিপদের ভয়ও রয়েছে। অসুস্থ হতে পারেন। তবে কপাল ভাল যে, এখনও পর্যন্ত এমন বিপদের কথা উদ্যোক্তাদের কানে আসেনি। তবে ভয় কাটছে না।
পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ কথা ঠিক যে মণ্ডপ থেকে দর্শনার্থীরা অনেক ফুচকা তুলে নিয়েছেন। অনেকভাবে অনুরোধ করা সত্ত্বেও এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। দর্শনার্থীরা ঠাকুর দেখতে আসেন তাই তাদের সঙ্গে তো আর খারাপ ব্যবহার করা চলে না। আমরা আমাদের মতো তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করছি, চেষ্টা করে যাবো।’’ এ ক্ষেত্রে পুজো কমিটির আশঙ্কা, দর্শকরা ইচ্ছেমতো মণ্ডপসজ্জা থেকে ফুচকা তুলে নেওয়ায় মণ্ডপসজ্জা অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।