সোমবার সিঙ্গুরে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ছবি: দীপঙ্কর দে।
সিঙ্গুর উৎসবের দিনেই সামনে এসেছিল শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। জমি আন্দোলনের দুই নেতা বেচারাম মান্না এবং রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সিঙ্গুরে পৃথক ভাবে পালন করেছিলেন উৎসব। এ বার অনিচ্ছুকদের টাকা ফেরানোর সরকারি প্রক্রিয়াতেও ঢুকে পড়ল দুই নেতার লড়াই।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর রবিবার বেড়াবেড়িতে ক্যাম্প করে চাষিদের দরখাস্ত এবং জমির কাগজ জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়। কিন্তু সোমবার সকাল থেকেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সকালে বেড়াবেড়ি পূর্বপাড়ার বধূ বীণাপাণি বাগ কাগজপত্র জমা দিতে এসেছিলেন বেড়াবেড়ির ক্যাম্প অফিসে। তিনি বলেন, “কাগজ জমা নেওয়া হচ্ছে শুনে এখানে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখছি কেউ নেই। ফিরে যাচ্ছি।” দুপুরের পর সিঙ্গুর বিডিও অফিসে কাগজপত্র জমা নেওয়ার কাজ চালু করেন সরকারি কর্মীরা। কিন্তু বেড়াবেড়ি থেকে ক্যাম্প রাতারাতি উঠে বিডিও অফিসে চলে যাওয়ার খবর গ্রামবাসীদের কাছে ছিল না। তাই সেখানে যাননি কেউই।
তৃণমূলের একাংশের কথায়, বেড়াবেড়ি ও আশপাশে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের প্রভাব তুলনামূলক বেশি। বেড়াবেড়ির কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা মহাদেব দাসও রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত। তিনিই এই ক্যাম্পের তদারকির দায়িত্বে। এটাই দলের অন্য অংশের গাত্রদাহের কারণ। তাই এই ক্যাম্প অফিস বেড়াবেড়ি থেকে সরানো হয় বলে শাসকদলের একাংশের অভিযোগ। মহাদেববাবুও বলেন, ‘‘বেড়াবেড়ির বহু মানুষ রয়েছেন, যাঁদের অনেকেরই বয়স হয়েছে। বিডিও অফিসে যেতে তাঁদের অসুবিধা হবে। বেড়াবেড়ি থেকে কেন ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হল, তা প্রশাসনের কাছে জানতে চাইব। এখানেই ফের ক্যাম্প চালু করার দাবিও জানাব।”
বেচারামবাবু বলেন, ‘‘এর পিছনে কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। এটা যুক্তির কথা। বহু চাষির একাধিক মৌজায় ও পঞ্চায়েত এলাকায় জমি আছে। তাই কোনও একটি পঞ্চায়েত এলাকায় ক্যাম্প হলে একাধিক জায়গায় চাষিদের ঘুরতে হবে। তাই কেন্দ্রীয়ভাবে বিডিও অফিসেই ক্যাম্প চালু হয়েছে।” গোষ্ঠীকোন্দল অবশ্য সামলানোর চেষ্টা করেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এ দিন প্রকল্প এলাকায় কাজের অগ্রগতি কেমন তা দেখতে আসেন তিনি। বিষয়টি তাঁর কানেও পৌঁছয়। তিনি সাফ জানান, দ্রুত কাজ করতে বিডিও অফিসের পাশাপাশি বেড়াবেড়ি ও গোপালনগরে আরও দুটি ক্যাম্প হবে।”