প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুজোর আগেই দেখা যেতে পারে ঝাড়গ্রামের দুর্গাহুড়ি ইকোপার্কের নয়া রূপ। পর্যটকদের কাছে অচেনা দুর্গাহুড়িকে নতুন রূপে হাজির করতে চায় বন দফতর।
ঝাড়গ্রাম মানেই বেলপাহাড়ি, কাঁকড়াঝোড়, চিল্কিগড়। অন্তত এমনটাই ভাবেন পর্যটকদের অধিকাংশ। কিন্তু তার বাইরেও ঝাড়গ্রামে যে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেটা অবশ্য পর্যটকদের কাছে অজানাই থেকে যায়। তেমনই একটি পর্যটন কেন্দ্র হল ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের দুর্গাহুড়ি ইকোপার্ক। খড়্গপুর বনবিভাগের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের অধীনস্থ ওই ইকো পার্কটি এ বার সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হচ্ছে বন দফতর।
কলকাতা থেকে সড়কপথে জাতীয় সড়ক ধরে সহজেই আসা যাবে এই দুর্গাহুড়িতে। ঝাড়গ্রাম থেকে গুপ্তমণি হয়ে কুলটিকরি ও কেশিয়াপাতা যাওয়ার রাস্তায় রয়েছে দুর্গাহুড়ি ইকোপার্কটি। দুর্গাহুড়িকে সে ভাবে পর্যটনের মানচিত্রে তুলে ধরা হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের আক্ষেপ। পর্যটন দফতর স্বীকৃত ‘ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজিম’ সংস্থার কর্তা সুমিত দত্তের আক্ষেপ, ‘‘ঝাড়গ্রামে এত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে, কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত সে ভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি, পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পরিকাঠামো নেই বলে পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হয়। তবে দুর্গাহুড়িকে নতুন ভাবে গড়ে তোলা হলে সেখানে প্রচুর পর্যটক যাবেন।’’ কারণ, সাঁকরাইল ব্লকের মানগোবিন্দপুরে গ্রামীণ রিসর্ট তৈরি হয়েছে। পর্যটকরা এখন সেখানে থাকছেন। কিছু দিন আগে সেখানে সঙ্গীত শিল্পী নচিকেতা রাত্রিবাস করে গিয়েছেন। তবে নচিকেতা অবশ্য দুর্গাহুড়ি জঙ্গলে যাননি। তবে সুমিত বলছেন, ‘‘বিস্তীর্ণ জঙ্গল ও জলাশয় ঘেরা এলাকাটি পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে তুললে ঝাড়গ্রামের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হবে।’’
প্রায় ৪০ হেক্টর জায়গা জুড়ে জঙ্গল ঘেরা রয়েছে এই ইকোপার্কটি। জঙ্গলের ভেতরে রয়েছে একটি বড় জলাশয়। বনজ গন্ধে বুঁদ হতে গেলে দুর্গাহুড়ির বিকল্প নেই, এমনটাই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে বন দফতরের উদ্যোগে বহু বছর আগে জলাশয়ের ধারে ধারে বসার জন্য শেড করে দিয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেঙ্গণের অভাবে তা একবারে নষ্ট হতে বসেছে। এমনকি, প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার জন্য একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। জঙ্গল ও পাথরের স্তূপ ঘেরা এলাকায় প্রায় ১৫ বছর আগে ইকোপার্ক তৈরি করেছিল বন দফতর। কিন্তু তারপর থেকে আর পার্কটির যত্ন নেওয়া হয়নি। তবে ২৫ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি সহ ওই মরশুমে বনভজোনের জন্য প্রচুর ভিড় হয়।
কয়েক দিন আগে খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম-সহ বন আধিকারিকেরা ইকোপার্কটি পরিদর্শন করেছেন। সূত্রের খবর, বন দফতর পার্কটি নতুন করে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে। এমনকি পার্কটি দেখভালের জন্য স্থানীয় বনসুরক্ষা কমিটিগুলির সাহায্য নেওয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দা খোকন সিং, চিরঞ্জিত সিংরা বলেন, ‘‘পার্কটির জলাশয়ের মধ্যে বোর্টিং ব্যবস্থা, বাচ্চাদের জন্য খেলনা, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বা পশু রাখা হলে পর্যটকদের আছে খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। স্থানীয় বাসিন্দারা আর্থিক ভাবে সমৃদ্ধ হবেন।’’ ডিএফও বলেন, ‘‘ইকো পার্কটি পরিদর্শন করেছিলাম। ইকোপার্কটির জন্য পরিকল্পনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’’