সে দিন - এ দিন। ২০ ডিসেম্বর বাসুদেব বাউলের বাড়িতে অমিত শাহ। মঙ্গলবার মমতার মঞ্চে গান গাইলেন সেই বাসুদেব। —নিজস্ব চিত্র
শান্তিনিকেতনে অমিত শাহ যাঁর বাড়িতে খেয়েছিলেন, সেই বাসুদেব দাস বাউলই এ বার তৃণমূলের পদযাত্রায়। বাসুদেবের অবশ্য সরল স্বীকারোক্তি, ‘‘বাউল মানুষ, অতশত রাজনীতি বুঝি না।’’ বিজেপির অভিযোগ, ‘‘চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছে তৃণমূল।’’
এ রাজ্যে প্রান্তিক মানুষের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের রাজনীতি শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল। জলপাইগুড়ির নকশালবাড়িতে রাজু মাহালি ও গীতা মাহালির বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন তৎকালীন বিজেপি সভাপতি তথা বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু পরের মাসেই সেই মাহালি দম্পতি যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। সেই ঘটনার ছায়া এ বার বীরভূমে।
বাসুদেব অবশ্য সক্রিয় কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। গত ২০ ডিসেম্বর রাজ্য সফরে এসে শান্তিনিকেতনে রোড শো করেন অমিত শাহ। তার আগে বাসুদেবের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গান গেয়ে শুনিয়েছেন বাসুদেব ও তাঁর সঙ্গীরা। তার পর ১০ দিনও পেরোয়নি। মঙ্গলবার একই রুটে পদযাত্রা করেন মমতা। বিপুল ভিড়ের মধ্যেও নজর কাড়লেন সেই বাসুদেব। মমতার পদযাত্রায় ছিলেন মোট ১ হাজার বাউল শিল্পী। তাঁদের মধ্যেই দেখা গেল, গান গাইতে গাইতে হাঁটছেন বাসুদেব।
তবে কি বাউলও রাজনীতির রং বদলে ফেললেন? বাসুদেব অবশ্য তেমন ভাবে বিষয়টি দেখছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা বাউল মানুষ। রাজনীতি বুঝি না৷ আমাদের যাঁরাই ডাকবেন, সেখানেই যাব। অমিত শাহ বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁকে খাইয়েছি। তেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেকেছেন, এখানেও এসেছি।’’
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীকে ঘিরে ঘৃণ্য রাজনীতি চলছে, বললেন মমতা
পদযাত্রা শেষে জামবুনিতে রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে পথসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভা শেষে বাসুদেবকে ডেকে নেন মমতা। বলেন গান শোনাতে। বাসুদেব গান ধরেন, ‘‘হৃদ মাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও এই গানই শুনিয়েছিলেন বাসুদেব। গানে খুশি হয়ে বাসুদবকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন মমতা। খুশি বাসুদেবও।
আরও পড়ুন: প্রসঙ্গ লভ জিহাদ: অমর্ত্যকে কটাক্ষের জবাবে মহুয়ার পাল্টা বিজেপিকে
বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাপের রাজনীতির অভিযোগ করেছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বোলপুরের নেতা অনুপম হাজরা বলেন, ‘‘বাসুদেবদাকে আমি দীর্ঘ দিন ধরে চিনি। তৃণমূল এত দিন ধরে এই সব গরিব, নিম্নবিত্ত লোকদের দিকে তাকায়নি। এখন অমিত শাহ যে বাড়িতে যাচ্ছেন, তাঁর উপরেই নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন দলের নেতারা। আমি মনে করি, বাসুদেবদাকেও চাপ দিয়ে এই কাজ করানো হয়েছে। উনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এটা করেননি।’’