প্রতীকী ছবি।
কয়েক বছর ধরেই বমি আর হজমের সমস্যায় জেরবার হচ্ছিলেন তিনি। স্বাভাবিক জীবনযাপন করা তাঁর কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিল। দক্ষিণ ভারতের একের পর এক শহর ঘুরে বেড়িয়েছেন নিরাময়ের আশায়। কিন্তু সুস্থ হতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত কলকাতার সরকারি হাসপাতালে মেয়ের সাহায্যেই সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনের পথে ফিরতে চলেছেন বছর তেতাল্লিশের বেবি ঘোষ।
বসিরহাটের বাসিন্দা বেবিদেবী ‘সিরোসিস অব লিভার’ রোগে ভুগছিলেন। পরীক্ষানিরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, লিভার বা যকৃৎ প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু দাতা না-পাওয়ায় বারবার আটকে গিয়েছে সেই প্রতিস্থাপন। রোগের চিকিৎসা থেকে যকৃৎ প্রতিস্থাপন— সবটাই হায়দরাবাদ বা বেঙ্গালুরুর মতো কোনও শহরে করার পরিকল্পনা করেছিল বেবিদেবীর পরিবার। কিন্তু কোথাও চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচ আবার কোথাও প্রতিস্থাপনের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করে হাল ছা়ড়তে বাধ্য হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মেয়েই লিভার দিয়ে মায়ের প্রাণ বাঁচালেন। মঙ্গলবার যকৃৎ প্রতিস্থাপন হল এসএসকেএম হাসপাতালে।
এসএসকেএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বেবিদেবীর ২৩ বছরের মেয়ে ঐন্দ্রিলা ঘোষের লিভারের ৩৫ শতাংশ মায়ের দেহে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এ দিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে মেয়ের যকৃতের অংশ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চলে মায়ের দেহে তা বসানোর কাজ। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার শেষ হয়। আপাতত মা-মেয়ে দু’জনেই সুস্থ আছেন। এর আগেও বহু বার জীবিত মানুষের দেহ থেকে লিভার প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই নানা ভ্রান্ত ধারণার জেরে এখনও লিভার দানের ক্ষেত্রে ব্যাপক জটিলতা রয়ে গিয়েছে।
পিজি-র গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘মেয়েটির লিভারের ৩৫ শতাংশ নেওয়া হয়েছে। আপাতত ও সুস্থ। পরবর্তী জীবনেও কোনও সমস্যা হবে না। এই অস্ত্রোপচারের পরে স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনও সমস্যা নেই।’’