—ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে একটি মামলায় জামিন দিল বসিরহাট আদালত। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনার পর পুলিশও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল শাহজাহানের বিরুদ্ধে। তার ৮ নম্বর কেসে জামিন পেলেন শাহজাহান।
শাহজাহানের আইনজীবী রাজা ভৌমিক বলেন, ‘‘পুলিশ যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল, তার একটি কেসে জামিন মিলেছে। এ বার একে একে বাকি মামলাগুলিতেও জামিনের আবেদন করা হবে।’’
গত ৫ জানুয়ারি রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ, শাহজাহানের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁরাই ইডির উপর চড়াও হন। ইডি আধিকারিকদের হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয়েছিল। ইডির উপর হামলার এই ঘটনায় ন্যাজাট থানায় দু’টি এফআইআর হয়েছিল। একটি এফআইআর হয় ইডির অভিযোগের ভিত্তি। অন্য এফআইআরটি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে রুজু করে পুলিশ। ওই দু’টি মামলাতেই মোট ৩৪টি ধারা যুক্ত করা হয়েছিল শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির যে যে ধারা যুক্ত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ৩৯২ এবং ৩৯৫। ওই দু’টি ধারাতেই ডাকাতির মতো অপরাধের উল্লেখ করা রয়েছে। এ ছাড়া, শাহজাহানের বিরুদ্ধে রয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ নম্বর ধারা, যা খুনের চেষ্টার অপরাধে যুক্ত হয়। শাহজাহানের বিরুদ্ধে ধারাগুলি হল— ৩২৫ (ইচ্ছাকৃত ভাবে গুরুতর আঘাত করা), ৩২৬ (ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা), ৩৩৩ (সরকারি আধিকারিকের কাজে বাধা দেওয়া এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করা), ১৮৯ (সরকারি আধিকারিককে হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো), ৩৯৭ (ডাকাতির সময়ে কাউকে গুরুতর আঘাত করা), ৪২৬ এবং ৪৪০ (অনিষ্ট করা এবং তা করতে গিয়ে কাউকে আঘাত, কারও মৃত্যুর কারণ হওয়া), ৩৪২ (কাউকে জোর করে আটকে রাখা), ১৪৩ (কোনও বেআইনি সংগঠনের সদস্য হওয়া), ১০৯ (অপরাধে প্ররোচনা দেওয়া)। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ধারা শাহজাহানের বিরুদ্ধে যুক্ত হয়েছে। ৩৯২, ৩০৭, ৩২৬, ৩৩৩-এর মতো ধারাগুলি জামিন অযোগ্য।
ইডির উপর হামলার ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছিলেন শাহজাহান। এর পরেই সন্দেশখালির নানা জায়গায় স্থানীয়দের বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমি-ভেড়ি দখল, মহিলাদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার হন তাঁর শাগরেদ উত্তর সর্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরা। পরে শাহজাহানও গ্রেফতার হন রাজ্য পুলিশের হাতে। বর্তমানে তিনি জেলবন্দি।