তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে ধন্দে ব্যারাকপুর তৃণমূল নেতৃত্ব। ফাইল চিত্র।
তিনজন প্রাক্তন বিধায়ক-সহ ৪১ জন তৃণমূল নেতার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। মঙ্গলবার থেকে ওই নেতাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মঙ্গলবার ব্যারাকপুর পুলিশ লাইনে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এমন নেতাও এই তালিকায় রয়েছেন, যাঁদের নিরাপত্তা পুরোপুরি তুলে না নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কমানো হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন তিনজন প্রাক্তন বিধায়ক, পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর–সহ ৪১ জন তৃণমূল নেতা–নেত্রী।
আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর নিরাপত্তা থেকে একজন পুলিশ কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষী প্রত্যাহারের তালিকায় রয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহর ভগ্নিপতি সুনীল সিংহ। যিনি আবার প্রাক্তন বিধায়কও বটে। পাশাপাশি অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিংহের নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া হয়েছে। জগদ্দলের প্রাক্তন বিধায়ক পরশ দত্তর নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া হয়েছে। সৌরভ ২০২১ সালের ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সম্প্রতি আবার সৌরভকে হারিয়ে বিজেপির হয়ে আলিপুরদুয়ার জেতা সুমন কাঞ্জিলাল আবার তৃণমূলে যোগদান করেছেন। আর অর্জুনের আত্মীয় সুনীল ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে নোয়াপাড়া কেন্দ্র থেকে পরাজিত হয়ে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। আর প্রবীণ পরশ ২০২১ সালের ভোটে তৃণমূলের তরফে টিকিট পাননি।
গত বছর পানিহাটি পুরসভার কাউন্সিলর অনুপম দত্তকে গুলি করে খুন করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর অনুপমের স্ত্রী অনিন্দিতা দত্তকে উপনির্বাচনে টিকিট দেয় তৃণমূল। উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে অনিন্দিতা এখন কাউন্সিলর। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁকে নিরাপত্তা দিয়েছিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। কিন্তু মঙ্গলবার থেকেই অনিন্দিতারও নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে।
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস, নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভানেত্রী আলোরানি সরকার–সহ তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে ধন্দে ব্যারাকপুর তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ঘনিষ্ঠ নৈহাটির কাউন্সিলর সনৎ দে-র নিরাপত্তাও তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও খড়দহ, পানিহাটি, কামারহাটি পুরসভারও বেশকিছু তৃণমূল কাউন্সিলরের নিরাপত্তা হয় প্রত্যাহার করা হয়েছে, নয় তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অধীন এক পুরসভার কাউন্সিলর বলেন, ‘‘কেন আমাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা জানি না। শুনলাম মঙ্গলবার থেকে নিরাপত্তা থাকা পুলিশ কর্মীরা আর আসবেন না। আমাদের দল বা প্রশাসনের তরফে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।’’