সব কিছুর বিচার হবে, তোপ মমতার

এর আগে জেলায়-জেলায় ভোটের প্রচারে জনসভায় তাঁর তোপের তির ছিল মূলত বিজেপি-র দিকে। বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় তৃণমূল নেত্রী আক্রমণের লক্ষ করলেন সিপিএমকেই। বুধবার মঙ্গলকোটের নতুনহাট ও মেমারির সাতগেছিয়াদুই সভাতেই সিপিএমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও মিথ্যা অভিযোগ জানানোর আঙুল তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

রানা সেনগুপ্ত

সাতগেছিয়া শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০০:১৫
Share:

মেমারির সাতগাছিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভা। ছবি: উদিত সিংহ।

এর আগে জেলায়-জেলায় ভোটের প্রচারে জনসভায় তাঁর তোপের তির ছিল মূলত বিজেপি-র দিকে। বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় তৃণমূল নেত্রী আক্রমণের লক্ষ করলেন সিপিএমকেই।

Advertisement

বুধবার মঙ্গলকোটের নতুনহাট ও মেমারির সাতগেছিয়াদুই সভাতেই সিপিএমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও মিথ্যা অভিযোগ জানানোর আঙুল তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাতগেছিয়া বাজার মাধমিক বিদ্যালয়ের মাঠের সভায় তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই। যদি বদলা নিতে চাইতাম, তাহলে এত দিন সিপিএমের নেতারা তো জেলে থাকতেন।” তাঁর অভিযোগ, “সিপিএমের লোকেরা তো চুরি করতে ওস্তাদ। তবু ওরা চিৎকার করছে। এ যেন চোরের মায়ের বড় গলা! সামান্য ভদ্রতাটুকু শেখেননি? এ বার সমস্ত কিছুর বিচার হবে। কত লোকের হাত-পা-চোখ কেটেছেন। মাটির তলা থেকে রাশি-রাশি কঙ্কাল বের হয়েছে। একটা এফআইআর পর্যন্ত করতে দেননি। সমস্ত ঘটনার এ বার বিচার হবে।”

চার জেলার পুলিশ সুপার বদলির প্রসঙ্গ টেনে এ দিন মমতা ফের বলেন, “এই পুলিশেরা তো তোমাদের সময়ে কাজ করতেন। তখন এঁরা ভাল ছিলেন, দু’দিনে খারাপ হয়ে গেলেন? ভাবছেন, একটা পুলিশ সুপার, একটা জেলাশাসককে সরিয়ে দিলে কাজ হয়ে যাবে? জানেন না, যাঁরা গেছে আর যাঁরা আসছে, তাঁরা সকলেই আমার লোক? এসপি, ডিএমদের অসম্মান করেছ, তার বদলা নেবই নেব। পাঁচটা এসপিকে সরিয়ে কী হবে? আমাকে কি সরাতে পারবেন? পারবেন না!”

Advertisement

আউশগ্রামের অর্জুনবাগানের বাসিন্দা সুস্মিতা সোরেন এ দিন মঙ্গলকোটের সভায় এসে অভিযোগ করেন, কয়েক দিন ধরে সিপিএম তাঁকে তৃণমূল না করার জন্য হুমকি দিয়েছিল। তিনি তৃণমূলের সভায় আসতেই সিপিএম বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলকোটে মমতা অভিযোগ করেন, পাঁচ জন পুলিশ অফিসারকে সরানোর পরেই সিপিএম বোমা-গুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে।

সভার পথে। বুধবার মঙ্গলকোটে তোলা নিজস্ব চিত্র।

মেমারির সভায় আসা দলের কর্মী-সমর্থকদের অবশ্য মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেন মমতা। তাঁর কথায়, “ওরা যদি বোমা, বন্দুক নিয়ে গ্রাম দখল করতে আসে, তাহলেও মাথা ঠান্ডা রাখুন। থানায় গিয়ে এফআইআর করুন। সিপিএমকে ভোটের পরে যাতে রাজনৈতিক ভাবে বাংলার মাটি থেকে মুছে ফেলা যায়, তার ব্যবস্থা করব।” রাজ্যের সিপিএম নেতাদের আক্রমণ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “প্যান কার্ড নেই, অথচ অ্যাকাউন্টে ১৬ কোটি টাকা! কোথা থেকে এই টাকা এল না কি জানেন না। সিপিএমের নেতাদের কাছে কোথা থেকে কত টাকা এসেছে, সেই টাকা দিয়ে, কে কি করেছে, তার বিচার হবে। সমস্ত কিছুর বিচার হবে।” মঙ্গলকোটে তাঁর অভিযোগ, “সিপিএম তো রিগিং করতিস। আমরা ও সব করি না। আগে রেজ্জাক-লক্ষণকে সামলাও তার পরে তৃণমূলের নামে নালিশ করতে আসবে।” এ দিনও তৃণমূল নেত্রীর দাবি, “আমরা ৩৫-৩৬টা আসন পাব ভাবতাম। এখন ৪২টাই পেতেই হবে।”

সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, “শুধু বর্ধমান জেলায় মিথ্যা মামলায় আমাদের ৭৮৪২ জন অভিযুক্ত। তাঁদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৩০ জনকে জেল খাটতে হয়েছে। আমাদের কত অফিস বন্ধ। কত কমরেড ঘরছাড়া। উনি যে আমাদের জেলে ভরার হুমকি দিয়েছেন, আগে থেকেই তা তো করেই দেখাচ্ছেন। নতুন করে আর কী আক্রমণ হতে পারে?” অমলবাবুর আরও দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, পুরনো এসপি-রা ফের জেলায় ফিরে আসবেন, তা সংবিধান সম্মত নয়। তাতে জেলার বিভিন্ন থানার ওসিরা দোটানায় পড়ছেন। আমাদের আশা, নির্বাচন কমিশন বিষয়টিকে লঘু ভাবে দেখবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement