চলছে পরীক্ষা। —নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতালের শয্যায় সদ্যোজাতকে নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেন এক পরীক্ষার্থী। শুক্রবার কালনা মহকুমা হাসপাতালের ঘটনা।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েত এলাকার ওই পরীক্ষার্থীর নাম প্রিয়াঙ্কা ঘোষ। কয়েক বছর আগে বছর উনিশের ওই তরুনীর বিয়ে হয়েছিল গ্রামেরই যুবক পেশায় বিএসএফ কর্মী পিন্টু রুদ্রের সঙ্গে। তবে বিয়ের পরে পড়াশোনা ছাড়েননি প্রিয়াঙ্কা। এ বছর সে কালনা শহরের হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে প্রিয়াঙ্কা। পরীক্ষার সিট পড়ে কালনা মহারাজা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা, ইংরেজি ও সংস্কৃত পরীক্ষা ভাল ভাবে দিলেও ১৭ মার্চ প্রিয়াঙ্কার প্রসব বেদনা ওঠে। এরপরে তাঁকে বর্ধমান শহরের একটি বেসরকারি নার্সিহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে একটি পুত্রসন্তান হয় তাঁর। এরপরে ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরে আসেন। শরীরে জোর না থাকায় তাঁর পক্ষে পরীক্ষাকেন্দ্রে বসে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক থাকায় বিষয়টি পরীক্ষাকেন্দ্রের ইনচার্জকে বিষয়টি জানান হয়। এরপরেই কালনা মহকুমা হাসপাতালে প্রিয়াঙ্কার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
শুক্রবার ছিল দর্শনের পরীক্ষা। এ দিন মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গিয়েছে, একটি ঘরে পাশে সদ্যেজাতকে নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে প্রিয়াঙ্কা। যে ঘরে পরীক্ষা চলছে সেখানে ছিল কড়া পুলিশি ব্যবস্থা। নজরদারিতে ছিলেন একজন শিক্ষক। তবে, পরীক্ষা চলার সময়ে মাঝে মাঝেই কেঁদে উঠছিল সদ্যেজাত। তাকে ঘুম পাড়িয়ে ফের পরীক্ষায় মন দিচ্ছিলেন ওই ছাত্রী।
পরীক্ষার পরে প্রিয়াঙ্কা বলেন, “আমার ছেলে আমার সৌভাগ্যর প্রতীক। ও বড় হলে আজকের দিনের গল্প শোনাব।”