সঙ্গী মিঠুন, ঝটিকা সফরে এলেন মমতা

এক দিকে, গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় দাপিয়ে প্রচার করছেন বিজেপি প্রার্থী। অন্য দিকে, কারখানায়-কারখানায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে এলাকায় বারবার সামনে এসেছে, সেই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন কতটা সার্বিক সমর্থন পাবেন, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। এমন পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে তিনটি সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০৭
Share:

বার্নপুরে বিমান থেকে নামার পরে মমতা ও মিঠুন। ছবি: শৈলেন সরকার।

এক দিকে, গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় দাপিয়ে প্রচার করছেন বিজেপি প্রার্থী। অন্য দিকে, কারখানায়-কারখানায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে এলাকায় বারবার সামনে এসেছে, সেই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন কতটা সার্বিক সমর্থন পাবেন, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। এমন পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে তিনটি সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেলেই আসানসোলে পৌঁছন তৃণমূল নেত্রী। চাটার্ড বিমানে বার্নপুরে ইস্কোর এয়ারস্ট্রিপে নামার পরে গাড়িতে করে আসানসোলের হোটেলে গিয়ে ওঠেন। সঙ্গে ছিলেন অভিনেতা তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী। আজ, শুক্রবার কুলটি, সালানপুর ও রানিগঞ্জে সভা করার কথা মমতার।

কুলটিতে এর আগে দু’বার সভা করলেও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে এখানে এই প্রথম জনসভা তাঁর। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আশা, দলনেত্রীর জনসভায় উপচে পড়া ভিড় হবে। আসানসোল লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন একাধিক বার জনসভার মাঠগুলি ঘুরে দেখেছেন। তিনি বলেন, “তিনটি সভাই কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমরা আশা করছি, সভায় আসা মানুষজন ভাল ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনবেন।” এর আগে কুলটিতে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সভা করেছেন দু’বার। ১৯৬৯ সালে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে কুলটি এসেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায়। ১৯৭৭ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে আসেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়।

Advertisement

তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেন জানান, এই লোকসভা কেন্দ্রের অধীনস্থ সাতটি বিধানসভা এলাকার কর্মী-সমর্থকদের ভাগাভাগি করে জনসভাগুলিতে যেতে বলা হয়েছে। কুলটির সভাটিতে থাকবেন কুলটি, আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার কর্মী-সমর্থকেরা। বারাবনি ও জামুড়িয়ার কিছু অংশের কর্মীরা যাবেন সালানপুরে। রানিগঞ্জ-সহ লোকসভা কেন্দ্রের বাকি অংশের কর্মী-সমর্থকেরা যাবেন রানিগঞ্জের সিহারসোল মাঠের সভায়। মুখ্যমন্ত্রী দু’টি সভা করবেন বলে প্রথমে জানানো হয়েছিল। পরে অবশ্য রানিগঞ্জের সভার কথা জানানো হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ২টো নাগাদ কুলটিতে, সালানপুরে বিকেল ৩টে ও রানিগঞ্জে বিকেল ৪টে নাগাদ সভা হওয়ার কথা।

গত লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মলয় ঘটককে প্রায় ৭৩ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরী। সে বার কংগ্রেস-তৃণমূল জোট গড়ে লড়েছিল। এ বার লড়াই চতুর্মুখী। বিজেপি আবার এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে তারকা গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে। যে তিনটি বিধানসভা এলাকায় মমতা সভা করবেন, গত লোকসভা ভোটের নিরিখে তার দু’টিতে এগিয়ে ছিল তৃণমূল, একটিতে সিপিএম। কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রায় ২২ হাজার ও বারাবনিতে আড়াই হাজার ভোটে এগিয়েছিল। রানিগঞ্জে সিপিএম এগিয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার ভোটে। তবে ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তিনটি কেন্দ্রেই জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থীরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলনেত্রী তিন বিধানসভা এলাকাতেই ব্যবধান আরও বাড়াতে চান।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার রানিগঞ্জে ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।

এই পরিস্থিতিতে একই দিনে তৃণমূল নেত্রীর পরপর তিনটি সভার আয়োজনে বিরোধীদের কপালে খানিকটা চিন্তার ভাঁজ। প্রকাশ্যে অবশ্য তা স্বীকার করছেন না কেউই। সিপিএম প্রার্থী বংশোগোপাল চৌধুরীর কথায়, “আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। আমি এখানকার লোক। বাসিন্দারা সে কথা জানেন। ইভিএমে ভোটারেরা ঠিক বোতামই টিপবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement