রঙিন মাছ দেখতে গিয়ে বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয়ে মৃত ছাত্র

পাশের বাড়িতে বেআইনি ভাবে ছড়িয়ে রাখা বিদ্যুতের তারে পা পড়ে বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক স্কুলছাত্রের। তার নাম বিশ্বজিত্‌ বিশ্বাস (১২)। কালনা ২ ব্লকের পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের মালোপাড়া গ্রামে সাতগাছিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ত সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০০:৪০
Share:

হালদারবাড়িতে ভাঙচুর।—নিজস্ব চিত্র।

পাশের বাড়িতে বেআইনি ভাবে ছড়িয়ে রাখা বিদ্যুতের তারে পা পড়ে বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক স্কুলছাত্রের। তার নাম বিশ্বজিত্‌ বিশ্বাস (১২)। কালনা ২ ব্লকের পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের মালোপাড়া গ্রামে সাতগাছিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ত সে। অভিযোগ, সাতসকালেই কাছাকাছি পরিমল হালদার নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে রঙিন মাছ দেখতে যায় বিশ্বনাথ। ওই বাড়ির নানা জায়গায় বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল। সেখানেই বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বিশ্বনাথ। তার মৃত্যুর পর উত্তেজিত জনতা বাড়িটিতে ভাঙচুর করে, আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিমলবাবু বিএসএফে কাজ করেন। মালোপাড়ার ওই বাড়িতে থাকেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়ে। পড়শিরাই জানান, পরিমলবাবুর দ্বাদশ শ্রেণির ছেলে বাপি হালদার মাস ছয়েক আগে রঙিন মাছের ব্যাবসা শুরু করে। বাড়ির সামনেই তারের বেড়া দিয়ে ছ’টি পাত্রে রঙিন মাছের চাষ শুরু করে সে। বাসিন্দাদের দাবি, হালদারবাড়িতে বেশ কিছু ফলফুলের গাছ রয়েছে। যাতে কেউ তাতে হাত না দেয় সে জন্য পরিবারের লোকজন নানা জায়গায় বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রাখে।

তবে পড়শিরা জানলেও হালদার বাড়ির ওই বিপজ্জনক প্রবণতার কথা জানত না বিশ্বজিত্‌। তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে পড়ে সে। সব্জির ভ্যান নিয়ে বাজারে যাওয়ার সময় বাবাকে সাহায্যও করে সে। তারপরেই দাঁত মাজতে মাজতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। তার মা রিঙ্কু বিশ্বাস জানান, সকাল ছ’টা নাগাদ একটা গোঙানির আওয়াজ কানে আসে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি দেখেন হালদার বাড়ির বারান্দায় পড়ে রয়েছে ছেলের নিথর দেহ। মায়ের চিত্‌কার শুনে ছুটে আসে বিশ্বজিতের ভাই হারাধন ও পড়শিরা। মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্‌সকেরা জানান, তার মৃত্যু হয়েছে। রিঙ্কুদেবীর অভিযোগ, বেআইনি ভাবে গোটা বাড়িতে বিদ্যুতের তার ছড়িয়ে না রাখলে এ ভাবে বেঘোরে ছেলের প্রাণটা যেত না।

Advertisement

আশপাশের বাসিন্দারাও জানান, বিশ্বনাথ রঙিন মাছ ভালবাসত। নিজের বাড়িতেও রঙিন মাছ রেখেছিল সে। মাছের টানেই এ দিন পাশের বাড়িতে যায়। কিন্তু বাড়িতে ঢোকার সময়েই জলাধারের পাশে ছড়িয়ে রাখা তারে পা পড়ে বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয় সে। স্থানীয়দের দাবি, সেখান থেকে তাকে ধরে একটি আমগাছের নিচে বসায় বাপি। সেখানেও বিদ্যুত্‌ সংযোগ থাকায় দ্বিতীয়বার বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয় সে।

বারো বছরের ছেলেটি এভাবে প্রাণ হারানোর পরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হালদারবাড়ির পাঁচিল ভেঙে দেয়। বাড়ির একতলার জিনিসপত্রও ভাঙচুর করা হয়। বাড়ি থেকে একটি মোটরবাইক টেনে বের করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আগুন লাগানো হয় বাড়ির একতলাতেও। পরে খবর পেয়ে দমকলের একটি ইঞ্জিন ও কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement