কর্তব্যরত এক রেলকর্মীকে খুনের চেষ্টার দায়ে দশ বছরের কারাদণ্ড হল এক যুবকের। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদন্ডের নির্দেশ হয়েছে। শুক্রবার কালনা মহকুমা আদালত ওই সাজা দেয়। সাজা ঘোষণা করেন ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারপতি অবনীকান্ত লাহা। সাজাপ্রাপ্তের নাম দীপু কবাডি।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি কালনার ধর্মডাঙা রেলগেটে গেটম্যানের কাজ করছিলেন রাজকুমার মণ্ডল। গভীর রাতে আচমকা কাছাকাছি ধর্মডাঙা গ্রামের দীপু অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় তাঁর কেবিনে ঢুকে পড়ে। তার পরে জোর করে রাজকুমারবাবুকে টানতে টানতে কিছুটা দূরে নির্জন রেললাইনের ধারে নিয়ে যায়। সেখানেই হাঁসুয়া দিয়ে তার বুকে ও পিঠে বেশ কয়েক বার কোপ মারে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রেলকর্মী রাজকুমারবাবু নিজের হাতের টর্চের আলোয় দীপুর মুখ দেখতে পেয়ে যান। টর্চটি অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই ছুঁড়ে ফেলে দীপু। পরে রেললাইনের ধারেই ফেলে রেখে চলে যায় রাজকুমারবাবুকে। কিছুক্ষণ পরে কোনওরকমে ওঠে কাছাকাছি এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান তিনি। সেখানে দীপুর কথা বলেই জ্ঞান হারান। রাতেই কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় রেলের শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে গার্ডেনরিচ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা জানান, বুধবার আদালত দীপুকে দোষি সাব্যস্ত করে।
মামলা চলাকালীন ১৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মলয়বাবু বলেন, “গ্রেফতারের পরে পুলিশের জেরায় দীপু স্বীকার করে ধারালো অস্ত্র দিয়েই ওই রেলকর্মীকে কুপিয়েছিল সে। পরে অস্ত্রটিও উদ্ধার করে পুলিশ। রাজকুমারবাবুর ছেলে তাপস বর্তমানে কালনা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার কথায়, “ঘটনার পর থেকেই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে বাবা। এই রায়ে আমরা খুশি।”