মাউসের ক্লিকেই তন্তুজ শাড়ি

ধুঁকতে থাকা অতীতকে পিছনে ফেলে এ বার অনলাইন বিকিকিনির মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌঁছোনোর চেষ্টা করছে তন্তুজ। পুজোর আগে অনলাইন পদ্ধতিতে শাড়ি বিক্রি শুরু করতে চলেছে তন্তুজ। আজ, সোমবার কলকাতার তন্তুজ ভবনে ওই পদ্ধতির সূচনা হবে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পদ্ধতিটির নাম দেওয়া হয়েছে ই-কমার্স।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২৬
Share:

ধাত্রীগ্রামে তন্তুজের শিবিরে মন্ত্রী।

ধুঁকতে থাকা অতীতকে পিছনে ফেলে এ বার অনলাইন বিকিকিনির মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌঁছোনোর চেষ্টা করছে তন্তুজ।

Advertisement

পুজোর আগে অনলাইন পদ্ধতিতে শাড়ি বিক্রি শুরু করতে চলেছে তন্তুজ। আজ, সোমবার কলকাতার তন্তুজ ভবনে ওই পদ্ধতির সূচনা হবে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পদ্ধতিটির নাম দেওয়া হয়েছে ই-কমার্স। রবিবার তন্তুজের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, ওই পদ্ধতির মাধ্যমে ক্রেতারা নিত্যনতুন নকশার শাড়ি দেখতে ও কিনতে পারবেন। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে কেনা শাড়ি নিজ দায়িত্বে বাড়িতে পৌঁছে দেবে তন্তুজ।

রবিবার স্বপনবাবুর উপস্থিতিতে তন্তুজের কর্তারা কালনা মহকুমার ধাত্রিগ্রাম এবং পূর্বস্থলীর হাটসিমলা জুনিয়র উচ্চবিদ্যালয়ে দু’টি শিবির করেন। ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, তন্তুজের লোকসান এক সময়ে প্রায় ১৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় পৌঁছে গিয়েছিল। তাঁর দাবি, “২৫ বছর পর চলতি বছরে তন্তুজ প্রথম লাভের মুখ দেখল। লাভের পরিমাণ ১৯ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে সংস্থার লেনদেন হয় ৮৬ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে এর লক্ষ্যমাত্রা ১০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।” তিনি জানান, তন্তুজের কাউন্টারগুলিকে ঢেলে সাজা হবে। বর্ধমানের গোলাপবাগ-সহ কয়েকটি জায়গায় নতুন কাউন্টার তৈরি করা হচ্ছে। যে কাউন্টার থেকে বেশি বিক্রি হবে তাদের পুরষ্কৃতও করা হবে। এ বার ২ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকার শাড়ি বিক্রি করে সেরা হয়েছে শ্যামবাজারের বিক্রয়কেন্দ্র। তার পর উত্তরপাড়া এবং ঢাকুরিয়ার দু’টি বিক্রয়কেন্দ্র।

Advertisement

তন্তুজের এক কর্তা জানান, সংস্থার শো রুমগুলিতে বিভিন্ন নতুন নকশায় তৈরি তাঁত এবং সিল্কের কাপড় কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাপড়গুলি কেনা হবে তাঁত সমবায় এবং স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এই অর্থের সাড়ে ৬ কোটি টাকা দিয়ে তাঁতের শাড়ি কেনা হবে। বাকি টাকায় কেনা হবে সিল্কের শাড়ি। মূলত বর্ধমান, হুগলি, নদিয়ার মতো তাঁত শিল্পী অধ্যুষিত জেলা থেকেই এই তাঁতের শাড়িগুলি কেনা হবে। সিল্কের শাড়ি কেনা হবে মুর্শিদাবাদ থেকে।

তবে তাত সমবায়গুলি বিরুদ্ধে অতীতে বিভিন্ন রকম দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ করেছেন তাঁত শিল্পীরা। সমুদ্রগড়ের তাঁত শিল্পী বঙ্কিম ঘোষের দাবি, “এই মহকুমার তাঁত সমবায়গুলির নামে অতীতে দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ উঠেছিল। এখনও তাঁত সমবায়ের মাধ্যমেই সাধারণ তাঁতিদের কাপড় কেনা হচ্ছে। ওই সমবায়গুলির দুর্নীতি বন্ধ করা না গেলে তন্তুজের কোনও প্রয়াসই তাঁত শিল্পীদের কাজে আসবে না।” এ দিন শিবিরে উপস্থিত তন্তুজ কর্তারা জানান, গত দেড় বছরে বর্ধমান জেলা থেকে বিভিন্ন তাঁত সমবায়ের মাধ্যমে সাড়ে সাত কোটি টাকার কাপড় কেনা হয়েছে। ধাত্রীগ্রাম এলাকায় তাঁতের শাড়ির হাট তৈরির জন্য জমির খোঁজ চলছে। ধাত্রিগ্রামের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “বাজার থেকে কম দামে কাপড় কিনে তন্তুজকে বিক্রি করার দিন শেষ। বর্তমানে চেকিং-সহ নানা কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ধরা পড়লেই কঠিন শাস্তি পেতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement