বস্তি উচ্ছেদে অভিযুক্ত তৃণমূলের কাউন্সিলর

বস্তি উচ্ছেদের ঘটনায় নাম জড়াল এক তৃণমূল কাউন্সিলরের। বর্ধমান শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড়নীলপুর সুকান্তপল্লির ওই বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ১৫ দিন ধরে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর, গৌরিশঙ্কর ভট্টাচার্য নিজেকে ওই বস্তির জায়গার মালিক বলে দাবি করে তাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন। রাতে মদ্যপ লোক এনে ভয় দেখানো হচ্ছে, বস্তিতে আগুন লাগানোর চেষ্টা চলছে বলেও তাঁদের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫২
Share:

জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ বস্তির বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র।

বস্তি উচ্ছেদের ঘটনায় নাম জড়াল এক তৃণমূল কাউন্সিলরের।

Advertisement

বর্ধমান শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড়নীলপুর সুকান্তপল্লির ওই বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ১৫ দিন ধরে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর, গৌরিশঙ্কর ভট্টাচার্য নিজেকে ওই বস্তির জায়গার মালিক বলে দাবি করে তাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন। রাতে মদ্যপ লোক এনে ভয় দেখানো হচ্ছে, বস্তিতে আগুন লাগানোর চেষ্টা চলছে বলেও তাঁদের দাবি। সোমবার জেলাশাসকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগও করেছেন ওই বস্তির ১৮টি বিপিএল তালিকা ভুক্ত পরিবার।

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে শুরু করেছেন তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর। অভিযুক্ত গৌরীবাবুর দাবি, বিষয়টি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিভূতোষ মণ্ডল দেখছেন। আর তার উল্টোটা দাবি করছেন বিভূতোষবাবু। বস্তির বাসিন্দা কেশব লাল বিশ্বাস, শ্যামলী দত্ত, রাধা দাসদের দাবি, ২৫ বছর আগে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ‘হোম ফর হোমলেস’ প্রকল্পে জিটি রোড বাইপাসের ধারে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। পরে জিটি বাইপাস চওড়া হওয়ায় তাঁদের ওই সুকান্তপল্লিতে পুনর্বাসন দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েকমাস আগে থেকেই স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা তাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টা শুরু করেন বলে অভিযোগ। বস্তিবাসীদের দাবি, গৌরীবাবু এই কাজে মদত দিচ্ছেন। এমনকী রবিবার রাতেও প্রায় ৭০-৮০ জন লোক মুখে কালো কাপড় বেঁধে বস্তিবাসী মহিলাদের উপর অত্যাচারের চেষ্টা করে বলে তাঁদের অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে অবশ্য পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

তবে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর বিভূতোষ মণ্ডলের দাবি, “ওই ওয়ার্ডের মধ্যে থাকা বস্তির বাসিন্দাদের উচ্ছেদের কোনও প্রশ্নই নেই। তাঁদের স্বেচ্ছায় সরে যেতে বলা হয়েছে।” তাঁর দাবি, “সরে যাওয়ার বদলে প্রতিটি পরিবারকে ন্যূনতম ১ কাঠা করে জায়গা দেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু তা নিয়ে জলঘোলা হতে শুরু করায় আমি আর ওই ব্যাপারের মধ্যে নেই। ওটা গৌরীবাবুই দেখছেন।” বিভূতোষবাবু আরও বলেন, “গৌরীবাবু নিজে ওই জায়গার মালিক নন। তবে জায়গাটির দাম প্রায় কয়েক কোটি টাকা। তাই নিয়েই গোলমাল বেধেছে।”

১৪ নম্বরের কাউন্সিলর গৌরীবাবু অবশ্য বলেন, “৭৮ সালে সিপিএম ওই বাসিন্দাদের ওখানে বসায়। বর্তমানে জায়গার দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু লোক ওদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে, এই গল্পটা ঠিক নয়। ওই জায়গার পাশেই বস্তির বাসিন্দাদের এক কাঠা করে জায়গা দিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন জমির মালিক। বিভূতোষবাবু ওই ব্যাপারটা দেখছেন। তবে ওই বস্তির বাসিন্দারা নতুন জায়গায় যেতে রাজি নন। সেটা নিয়েই সমস্যা দেখা দিয়েছে।”

বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরসভা এলাকায় এই ধরনের অভিযোগ উঠলে তা পুরসভারই দেখা উচিত। তবু আমরা বস্তি উচ্ছেদের বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement