নির্দিষ্ট বই ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় বসতে বাধ্য হচ্ছে জেলার শত শত পড়ুয়া। কোনও কোনও স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেক স্কুলে আবার শুরু হচ্ছে আজ, বুধবার থেকে। কিন্তু, বর্ধমান জেলার বহু স্কুলে সব পড়ুয়ার হাতে এখনও পৌঁছয়নি ‘বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃৃতির ইতিহাস’ বইটি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পড়ুয়া, শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা। জেলা স্কুল পরিদর্শক মালবিকা সাহা অবশ্য বিষয়টি বিশেষ আমল দিতে রাজি নন। খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তালিকায় থাকা বাংলা বইটি বাজার থেকে কিনে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা পড়াশোনা শুরু করে। কিন্তু গোল বাধে কয়েক দিনের মধ্যেই। কবীর সুমন প্রসঙ্গে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় রাজ্য সরকার বইটি বাতিল করে। জুলাইয়ের শেষ দিকে সংসদের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, বইটির পরিমার্জিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। স্কুলগুলি যেন তা সংগ্রহ করে নেয়। সর্বশিক্ষা অভিযানের মাধ্যমে তা পৌঁছয় সহকারী স্কুল পরিদর্শকের দফতরে। সেখান থেকে অগস্টের মাঝামাঝি বই সংগ্রহ করে স্কুলগুলি।
কিন্তু নানা স্কুলেরই অভিযোগ, তাদের সব পড়ুয়ার জন্য বইটি দেওয়া হয়নি। স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গড়ে ৫০-৬০ শতাংশ পড়ুয়ার জন্য বইটি দেওয়া হয়েছে। জেলা দফতর থেকে নতুন করে বই এলে তা বাকি পড়ুয়াদের দেওয়া হবে বলে আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সেই বই আসেনি। ফলে, বহু পড়ুয়াই টেস্ট পরীক্ষায় বসছে বাংলা বই হাতে না পেয়ে।
দুর্গাপুরের নতুনডাঙা হাইস্কুল, অন্ডাল হাইস্কুল, কাঁকসার সিলামপুর হাইস্কুল, মলানদিঘি হাইস্কুল বা কালনার সিমলন এ কে বিদ্যামন্দিরএই সব স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ, বুধবার থেকে। এই সমস্ত স্কুলেই খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণির বহু পড়ুয়া বইটি হাতে পায়নি। পড়ুয়ারা জানায়, বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে বইটি পড়তে হয়েছে তাদের। ফলে, পড়াশোনায় সমস্যা হয়েছে। পরীক্ষায় তার ছাপ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন পরীক্ষার্থীর কথায়, “বই হাতে না থাকায় প্রস্তুতিতে তো ঘাটচি রয়েছেই। মাস তিনেক পরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এখনও বই না পেলে কী যে হবে, জানি না।” নানা স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, পড়ুয়াদের এই বইটির ক্ষেত্রে মিলেমিশে পড়াশোনা করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
কেন এই পরিস্থিতি, সে ব্যাপারে সদুত্তর মেলেনি জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে। দুর্গাপুরের সহকারী স্কুল পরিদর্শক সুকুমার সেনের বক্তব্য, “আমাদের দফতরে যা বই এসেছিল, সব বিলি করে দিয়েছি। জেলা থেকে বই এলে বাকি পড়ুয়ারাও পাবে।” জেলা স্কুল পরিদর্শক মালবিকা সাহা বলেন, “কেন সব পড়ুয়া বই পায়নি, তা এখন বলা যাবে না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”