ইস্কোর ব্লাস্ট ফার্নেস। —নিজস্ব চিত্র।
আধুনিকীকরণের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে মাস তিনেক আগে। দেশের সব চেয়ে বড় ব্লাস্ট ফার্নেসও কাজ শুরু করে দিয়েছে। বার্নপুরে ইস্কো কারখানার এই প্রকল্পের কাজ দেখতে এসে সন্তোষ প্রকাশ করলেন সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ভার্মা। বার্নপুরের এই স্টিল প্ল্যান্টে আরও একটি বড়সড় সুসংহত ইস্পাত উত্পাদক ইউনিট তৈরির ব্যাপারে প্রাথমিক চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলে ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত ডিসেম্বরে আধুনিকীকরণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ছে বার্নপুর ইস্কোয়। তৈরি হয়েছে বার্ষিক আড়াই মিলিয়ন টন ইস্পাত উত্পাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সুসংহত ইউনিট। ডিসেম্বরেই এই কারখানায় দেশের সব চেয়ে বড় ব্লাস্ট ফার্নেস (লোহা গলানোর চুল্লি) আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হয়েছে। ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্ষিক প্রায় তিন মিলিয়ন টন উত্পাদন ক্ষমতার আরও একটি ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা চলছে। প্রাথমিক ভাবে ২০২৫ সালের মধ্যে সেটি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হচ্ছে।
শনিবার বার্নপুরে কারখানায় এসে আধিকারিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ভার্মা। কারখানা সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে ওই নতুন ইউনিটের ভাবনাচিন্তা নিয়ে কথা হয়। ইস্কোর জনসংযোগ দফতরের এজিএম ভাস্কর কুমার জানান, বৈঠক শেষে সেলের চেয়ারম্যান সদ্য নির্মিত ব্লাস্ট ফার্নেস-সহ আধুনিকীকরণ প্রকল্প এলাকার নানা বিভাগ ঘুরে দেখেন। কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষও ব্যক্ত করেন।
সে দিন আইএনটিইউসি, সিটু-সহ নানা শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সেলের চেয়ারম্যানের কাছে ১৯৯৭ সালের বেতন বৃদ্ধির বকেয়া মেটানোর দাবি করা হয়। আইএনটিইউসি-র বার্নপুর ইউনিটের সভাপতি হরজিত্ সিংহ এবং সিটুর সম্পাদক তরুণ ভট্টাচার্য দাবি করেন, এই বকেয়া না মেলায় কয়েক হাজার শ্রমিক-কর্মী অসুবিধায় পড়েছেন। এ ছাড়া আধুনিকীকরণ প্রকল্প এলাকায় আরও উন্নয়নের দাবি জানানো এবং ইস্কোর পুরোন প্ল্যান্টের ফাঁকা জমি পরবর্তী কালে কী ভাবে কাজে লাগানো হবে, তা জানতে চান তাঁরা। শ্রমিক নেতাদের দাবি, সেলের চেয়ারম্যান তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, শ্রমিক স্বার্থে আধুনিকীকরণ প্রকল্প এলাকায় আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। ১৯৯৭ সালের বকেয়া মেটানোর প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ইস্কো এখনও লাভের মুখ দেখেনি। কয়েকশো কোটি টাকা লোকসানে চলছে সংস্থা। কারখানার লাভ না হলেও আয়-ব্যয়ের মধ্যে সমতা এলেই বকেয়া মেটানোর বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হবে।
কারখানা সূত্রের খবর, পুরনো প্ল্যান্টের জায়গা কী ভাবে কাজে লাগানো হবে, সে প্রশ্নেই সেলের চেয়ারম্যান আরও একটি সুসংহত ইস্পাত উত্পাদক ইউনিট তৈরির ভাবনাচিন্তার কথা জানিয়েছেন। শ্রমিক সংগঠনের তরফে এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানানো হয়েছে।