বোমার আঘাতে কর্মী খুনে গ্রেফতার সাত কেতুগ্রামে

বোমার আঘাতে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় কেতুগ্রামের বাঁশরা থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে কাটোয়া আদালতে তোলা হয়। বাকি দু’জন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ সেলে রয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের থেকে তোলা আদায়ের প্রতিবাদ করা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজিও হয়। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় সুনীল মাঝি (৪৫) নামে এক ব্যক্তির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০১:২৩
Share:

বোমার আঘাতে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় কেতুগ্রামের বাঁশরা থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে কাটোয়া আদালতে তোলা হয়। বাকি দু’জন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ সেলে রয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের থেকে তোলা আদায়ের প্রতিবাদ করা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বোমাবাজিও হয়। বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় সুনীল মাঝি (৪৫) নামে এক ব্যক্তির। এরপরে দোষিদের গ্রেফতারের দাবিতে মৃতদের ঘিরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান সুনীলবাবুর পরিজনেরা। বিকেলে মৃতের স্ত্রী কল্যাণী মাঝি কেতুগ্রাম থানায় তৃণমূলের পালিটা অঞ্চলের সভাপতি নান্টু খোন্দেকার-সহ ৩১ জনের নামে অভিযোগ জানান। অভিযোগ পাওয়ার পরেই সাতজনকে ধরে পুলিশ। কল্যাণীদেবীর দাবি, বহিরাগত তৃণমূল দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমা তার স্বামীর মাথায় লাগলে ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। বর্ধমান জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুক্রবার ১০০ দিনের কাজের মজুরি বাবদ শ্রমিকদের কাছ থেকে ‘তোলা’ আদায় করে তৃণমূলের সুপারভাইজাররা। শনিবার সকালে বাঁশরা গ্রামে তাঁদের বৈঠক চলাকালীন তৃণমূলের আরেক গোষ্ঠী হামলা চালায়। আহত হন চার জন। তাঁদের মধ্যে পীযূষকান্তি ঘোষ ও রতন পাইন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার হাসপাতালে শুয়ে তাঁরা বলেন, “১০০ দিনের কাজ কী ভাবে করা যায় তা নিয়ে আমরা বৈঠক করছিলাম। তখনই অতর্কিতে হামলা চালায় ওরা। আমাদের রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়।” তবে ওই গ্রামের তৃণমূলের আরেক গোষ্ঠীর নেতা বিকাশ মাঝির অভিযোগ, “গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে ওরা গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। পরে বহিরাগতদের এনে বোমাবাজি শুরু করে। সেই আঘাতেই আমাদের কর্মী সুনীলবাবু মারা যান।” পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার দুপুরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত হয়। পরে পুলিশের পাহারায় তাঁর শেষকৃত্য হয়।

সুনীলবাবুর ভাইপো বাবু মাঝি ঘটনার পর অভিযোগ করেন, “আমার কাকা তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী। তৃণমূলের শাসক গোষ্ঠীর লোকজনের অন্যায় কাজকর্মের প্রতিবাদ করতেন তিনি। ওদের ছোড়া বোমার ঘায়েই কাকাকে প্রাণ হারাতে হল।” গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সুনীলবাবু লোকসভা ভোটের সময় তৃণমূলের ‘ভোট লুঠের’ প্রতিবাদ করেন। তখনও তার উপর ‘হামলা’ চালানো হয়। যদিও এ সব অভিযোগ মানতে চায়নি কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের ইন্ধনে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি জাহের শেখ বলেন, “কেউ তৃণমূল, কেউ অন্য দল বলে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রচার পেতে চাইছে, হামলাকারীরা আসলে সিপিএম। আর তাদের হামলায় আমাদের কর্মী মারা গিয়েছেন। ওই পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করানো হচ্ছে।” সিপিএমের ভাগীরথী অজয় জোনাল কমিটির সদস্য তপন কাজি বলেন, “ওখানে আমাদের অস্তিত্বই নেই। নেতারা গ্রামছাড়া। নিহতের স্ত্রী কল্যাণীদেবী তৃণমূলের নামেই অভিযোগ করেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকতে তৃণমূলের নেতারা আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement