এভাবেই জানা যাবে ভিড় কত। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট দিতে গিয়ে কাঠফাটা রোদে কত ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কে জানে!
বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে সব ভোটারই বোধহয় এই আশঙ্কায় ভোগেন। ঠিক কখন গেলে বুথের সামনে লাইনটা ছোট পাওয়া যাবে, কিছুটা আন্দাজ-অনুমান করে বাড়ি থেকে বেরোনোর চেষ্টাও করেন অনেকে। বর্ধমানে এ বার যাতে ভোটারদের আর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার এই হা-হুতাশ করতে না হয়, সে বন্দোবস্ত করেছে জেলা প্রশাসন।
বুথে কত জনের লাইন রয়েছে, এ বার এসএমএসে জেনে নিয়েই ভোট দিতে যাওয়া যাবে বর্ধমানে। ভোটের দিন জেলা জুড়ে এই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার সৌমিত্র মোহন। তিনি বলেন, “ভোটের দিন বুথে ভিড় কেমন বা কত জনের লাইন রয়েছে, তা জানতে একটি এসএমএস করতে হবে ভোটারকে। পাল্টা এসএমএসে তিনি জেনে যাবেন, ঠিক কত জনের পরে তাঁকে ভোটের লাইনে দাঁড়াতে হবে।” তাঁর দাবি, “এই ব্যবস্থা এ রাজ্যে প্রথম। সারা দেশে এক মাত্র চণ্ডীগড় ছাড়া কোনও রাজ্যে ভোটারদের স্বার্থে এই ধরনের ব্যবস্থা করা হয়নি।”
জেলাশাসক আরও বলেন, “জেলার ৬৭৮৪টি বুথের প্রতিটিতে যে সব ভোটবন্ধুরা থাকবেন, তাঁদের এক জনের মোবাইল নম্বর আমাদের কাছে নথিভুক্ত থাকবে। সেই নম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটারদের লাইন সম্পর্কে তথ্য প্রতি আধ ঘণ্টা অন্তর জানাতে পারবেন। ভোটার ৯২৩০০৮৫০০৫ নম্বরে এসএমএস পাঠালে পাল্টা এসএমএসে জানানো হবে তাঁর বুথের লাইনে সেই সময় কত জন উপস্থিত রয়েছেন।” তিনি জানান, এ জন্য ভোটারকে bd লিখে স্পেস দিয়ে নিজের ভোটার পরিচয়পত্রের নম্বরটি টাইপ করে এসএমএসটি পাঠিয়ে দিতে হবে।
জেলাশাসক জানান, এ ছাড়া bardhaman.nic.inএই ওয়েবসাইট থেকেও ভোটারের নিজের কেন্দ্র সম্বন্ধে সমস্ত তথ্য পাবেন। কেন্দ্রে ভোটারদের জন্য কী কী সুবিধা, যেমন মহিলা, অসুস্থ, অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশ্রামকক্ষ-সহ কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, এ সব জানা যাবে। এই সুবিধাগুলি শুক্রবার থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত মিলবে বলে জেলাশাসক জানান। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে জেলার ভোটকেন্দ্রগুলির অবস্থান গুগল ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করেছি। সেই বুথে কোন রাস্তা দিয়ে পৌঁছনো যাবে বা কোথা দিয়ে বেরিয়ে আসা যাবে, তারও হদিস মিলবে সেখানে। আমরা চাই, যত বেশি সংখ্যাক মানুষ ভোট দিন। তাঁদের ভোট দিতে গিয়ে যাতে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে না হয়, সে জন্যই সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে এক দিকে যেমন বুথ জ্যাম হবে না, অন্য দিকে দিনভর সমান গতিতে ভোট পড়বে বলেই আমাদের আশা।”