ফের মিছিলে দল থেকে বহিষ্কৃত অসীম প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র।
প্রথমে পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে বোঝানো। তাতে কাজ না হলে সিপিএম বিরোধীদের উপরে যে ‘ওষুধ’ প্রয়োগ করেছিল, তা দিতে হবে। বিজেপিকে বাগে আনতে কর্মীদের এমনই পরামর্শ দিলেন দুর্গাপুরের ডেপুটি মেয়র তৃণমূলের অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার শহরের গাঁধী মোড়ে জনসভা করে তৃণমূল। দিন কয়েক আগে এই মাঠে সভা করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তার পরেই এখানে পাল্টা সভার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। এই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, টিএমসিপি-র রাজ্য সম্পাদক অশোক রুদ্র প্রমুখ।
ডেপুটি মেয়র অমিতাভবাবু তাঁর বক্তব্যে শুরুতেই সিপিএমের কড়া সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, “আমরা যখন বিরোধী ছিলাম, নানা ভাবে বিপাকে ফেলেছিল সিপিএম। কেউ রেহাই পাইনি।” এর পরেই রাজ্যের স্বার্থে বিজেপিকে আটকানো উচিত দাবি করে কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “প্রথমে পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে বোঝান আপনারা। তাতে কাজ না হলে সিপিএম এক সময়ে যে ওষুধ আমাদের উপরে প্রয়োগ করেছিল, আপনারাও সে পথে হাঁটুন। পালাবার পথ পাবে না।” এই বক্তব্য প্রসঙ্গে দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ববাবু অবশ্য বলেন, “এটা ওঁর ব্যক্তিগত মত। দলের সাফ নির্দেশ, বদলা নয়, বদল চাই।”
অমিতাভবাবুর এমন মন্তব্য শুনে বিজেপি-র দুর্গাপুর জেলা সভাপতি অখিল মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “কংগ্রেসের অত্যাচার সত্ত্বেও এক সময়ে সিপিএম ক্ষমতায় এসেছিল। একই ভাবে সিপিএমকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। ওরাও যদি একই পথ নিতে চায় তাহলে আমাদেরই লাভ। ইতিমধ্যে তা প্রমাণ হতে শুরু করেছে।” প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর বক্তব্য, “বামফ্রন্টের আমলে বিরোধীরা সম্মান পেতেন। ২০১১ সালের পরে তা আর নেই।”
এ দিন সভায় যাওয়ার বড় মিছিলে ফের দেখা গেল তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা অসীম প্রামাণিককে। নানা কারখানা, হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে বছর দেড়েক আগে অসীমবাবুকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও তাঁকে দলের নানা কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে। গত বুধবার মদন মিত্রকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মুচিপাড়া মোড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে যে বিক্ষোভ হয়, তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন তাঁকে মিছিলের নেতৃত্বে দেখা গিয়েছে। এ ব্যাপারে তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ববাবুর বক্তব্য, “দলে ফেরার রাস্তা খোলা আছে। আচরণ বদলাতে হবে।”