কল্যাণেশ্বরী মন্দির থেকে বেরিয়ে কচুরিতে কামড়। ছবি: শৈলেন সরকার।
মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে কচুরির দোকান দেখে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। পেটে হাত দিয়ে সঙ্গীদের বললেন, “একটু দাঁড়াও। খুব খিদে পেয়েছে।” দোকান থেকে কচুরি কিনে খেয়ে দ্বিতীয় দিনের প্রচারে নামলেন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।
মঙ্গলবার শহরে পৌঁছেই ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন। আর বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ কয়েক জন কর্মী-সদস্যকে নিয়ে পৌঁছে গেলেন কুলটির কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে। তাঁর আসার কথা জানা থাকায় উপস্থিত ছিলেন মন্দিরের প্রধান সেবায়েত দিলীপ দেওঘরিয়া। মেয়ে শর্মিলি ও নিজের নামে পুজো দেওয়ার পরে মনস্কামনা পূরণের জন্য অশ্বত্থ গাছে সুতো দিয়ে ঢিলও বাঁধেন বাবুল। মূল মন্দিরের ঘণ্টা বাজিয়ে প্রার্থনায় বসলেন। তার পরেই বেরিয়ে তিনটি কচুরি কেনেন। সঙ্গীদের দু’টি দিয়ে নিজে খান একটি। এ দিন বিকেলে রানিগঞ্জে কর্মিসভা ছিল বাবুলের। সেখানে যাওয়ার আগে গুরুদুয়ারা ও ষোল আনা দুর্গা মন্দিরে যান তিনি। কর্মিসভায় এ দিন বাবুল ফের মনে করিয়ে দেন, তিনি রাজনীতির লোক নন, সংস্কৃতি জগতের মানুষ। তবে সুস্থ সমাজব্যবস্থা গড়ার জন্য কাজ করতে চান তিনি।
রানিগঞ্জে প্রচারে বাবুল। ছবি:ওমপ্রকাশ সিংহ।
অনেকে তাঁকে বহিরাগত বলে প্রচার করছে, এ প্রসঙ্গে বাবুলের বক্তব্য, “এটা দেশের সরকার গড়ার ভোট। আমি এ দেশের মানুষ, সেটাই যথেষ্ট।” আগের দিনের মতোই তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদী গুজরাতে যে ভাবে শিল্পের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে আসানসোলেও তেমনই উন্নয়ন হবে। তিনি বলেন, “কম বয়সে এত বড় সুযোগ পাব, ভাবতে পারিনি। এখন আমি চাই দলমত নির্বিশেষে সবাই আমার পাশে দাঁড়ান।” দেশে জোট রাজনীতির শিকার হয়ে বড় দলগুলি নানা সিদ্ধান্ত নিতে বাধা পাচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। তাতে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে দাবি করে এই নির্বাচনে বিজেপি-কে ভোট দেওয়ার আর্জি জানান বাবুল।
কর্মিসভা সেরে বাইরে বেরিয়েই বাবুল কার্যত জনতার হাতে বন্দি হয়ে যান। হাত মেলানো, ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। হাসিমুখেই সে সব সামলান বিজেপির এই তারকা প্রার্থী। জনতার উদ্দেশে ‘কহো না প্যার হ্যায়’ বলেও বার্তা দেন তিনি। ফেরার পথে পীরবাবার মাজারে চাদর চড়াতে যান বাবুল।
সকালে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে বাবুল যাওয়ার পরে ভিড় করেন এলাকার মানুষজন। পুজো দেওয়ার পরে মন্দির ঘুরে দেখেন বাবুল। তখন অনেকেই তাঁর কাছে ভোটে জিতলে এই মন্দিরের উন্নয়নের কথা ভাবার জন্য অনুরোধ করেন। তাঁদের দাবি, এই মন্দিরকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করা উচিত। বাবুল আশ্বাস দেন, সাংসদ হয়ে তাঁর প্রধান কাজগুলির একটি হবে এই বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে তদ্বির করা।
কল্যাণেশ্বরী মন্দির থেকে বেরিয়ে কাছেপিঠে কিছু জায়গায় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন বাবুল। দলীয় কার্যালয়ে বসে কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতাও করেন। আসানসোলে দলের একটি অফিসের উদ্বোধন করেন তিনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গল ও বুধবারের এই ব্যস্ত কর্মসূচি শেষে বাবুল কলকাতা ফিরে যাবেন। এর পরে ফের ২৬ মার্চ থেকে প্রচারে নামার কথা তাঁর।