কালনা হাসপাতাল

দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড সুপার

হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ শেখ সওকত আলি কাজে যোগ দেননি, ফোনও ধরেননি, তাই শুক্রবার তাঁর নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন সুপার অভিরূপ মণ্ডল। সোমবার স্বাস্থ্যভবন থেকে চিঠি পেলেন সুপার। দেড় বছর পুরনো আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে অভিরূপবাবুকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০২:৪৬
Share:

অভিরূপ মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ শেখ সওকত আলি কাজে যোগ দেননি, ফোনও ধরেননি, তাই শুক্রবার তাঁর নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন সুপার অভিরূপ মণ্ডল। সোমবার স্বাস্থ্যভবন থেকে চিঠি পেলেন সুপার। দেড় বছর পুরনো আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে অভিরূপবাবুকে।

Advertisement

ডাক্তারের অনুপস্থিতি নিয়ে পদক্ষেপ করার তিনদিনের মাথায় এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কি কাকতালীয়? সুপার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “ওই সুপার ১৫ লক্ষ টাকার তছরুপে অভিযুক্ত। ওই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ বার পরবর্তী পর্যায়ে তদন্ত হবে।” অনুপস্থিত ডাক্তারের নামে নিখোঁজ ডায়েরি করার সঙ্গে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনও যোগ আছে কি না, প্রশ্ন করলে উত্তর দেননি স্বাস্থ্য অধিকর্তা।

মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে বন্ধ্যাত্বকরণ ও নার্সদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ হয়েছিল। বরাদ্দ টাকার হিসেবে গরমিল নজরে আসে। যে সরকারি কর্মচারী বিষয়টি দেখাশোনা করতেন, গত বছর অবসর নেন তিনি। সেই সময়ে বিষয়টি জানাজানি হলে একটি দল তৈরি করে ঘটনার তদন্ত শুরু করান জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক। রিপোর্ট জমা পড়ে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনে। স্বাস্থ্য ভবন থেকে তদন্তকারী দল দু’বার হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, সরকারি কোনও কর্মী অবসর নেওয়ার আগে তাঁর রেকর্ড দেখে নেওয়া হয়। কোনও গরমিল থাকলে রিপোর্টে তা জানানো হয়। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মীর অবসরকালীন কাগজপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কীভাবে পাঠাল, তার দায়ও সুপারের উপরই পড়েছে। গরমিল ধরা পড়ার পরেও সুপার কেন বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করেননি, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

তবে চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, কালনা হালপাতাল থেকে পরপর চিকিৎসক অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসক সঙ্কট কাটাতে সম্প্রতি শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়ক ও নেতাদের কাছে বারবার তদ্বির করেছিলেন সুপার। স্বাস্থ্য দফতরের অফিসাররা তা নিয়ে রুষ্ট হয়ে থাকতে পারেন। সেই সঙ্গে, শিশু বিশেষজ্ঞের নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করাও সুপারের বিরুদ্ধে গিয়ে থাকতে পারে। তাই পুরনো একটি মামলায় তড়িঘড়ি সাসপেন্ড করা হল তাঁকে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে অভিরূপবাবু বলেন, “আমার অন্যত্র বদলির নির্দেশ এসে গিয়েছিল। এ সময় কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই এই নির্দেশ পেলাম। চেষ্টা করব নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের।”

ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই কাজে যোগ দিয়েছেন ডাক্তার শেখ সওকত আলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement