দুর্ঘটনার কিনারা করতে বসবে ৩৭টি সিসিটিভি

জেলা জুড়ে বাড়তে থাকা পথ দুর্ঘটনার কিনারা করতে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের ৩৭টি জায়গায় সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে জেলা পুলিশ। পুলিশের দাবি, সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে জেলা জুড়ে বেশ কিছু নির্জন জায়গা রয়েছে যেগুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ। লোক যাতায়াত কম হওয়ায় রাতেই শুধু নয়, দিনেদুপুরেও সেখানে দুর্ঘটনা ঘটলে কাউকে চিহ্নিত করা যায় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৮
Share:

জেলা জুড়ে বাড়তে থাকা পথ দুর্ঘটনার কিনারা করতে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের ৩৭টি জায়গায় সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে জেলা পুলিশ।

Advertisement

পুলিশের দাবি, সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে জেলা জুড়ে বেশ কিছু নির্জন জায়গা রয়েছে যেগুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ। লোক যাতায়াত কম হওয়ায় রাতেই শুধু নয়, দিনেদুপুরেও সেখানে দুর্ঘটনা ঘটলে কাউকে চিহ্নিত করা যায় না। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার দাবি, “সিসিটিভি বসানো হলে নজরদারি তো বটেই, সঙ্গে পুলিশের কাছ থেকে মানুষ ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন কি না তাও বোঝা যাবে।” প্রস্তাবটি ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও পাঠিয়েছেন তিনি।

জেলার একটা বড় অংশ দিয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ও পুরনো জিটি রোড। দুর্ঘটনার বহর ক্রমশ বাড়ছে সেখানে। এসপি বলেন, “প্রতি রাতে সমস্ত থানা থেকে আরটি ভ্যান টহল দিতে বের হয়ে যায়। কিন্তু তারা ঠিকমত টহল দিচ্ছে না কি কাজে ফাঁকি দিয়ে এক জায়গায় গাড়ি রেখে ঘুমিয়ে পড়ছে, তা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হবে সিসিটিভি মনিটরে চোখ রাখা।” এসপির দাবি, “যদি দেখা যায় কোন থানার আরটি ভ্যান এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, টানা পনেরো মিনিটের মধ্যে তার জায়গা ছাড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, তাহলে জেলা সদর থেকে আরটি ভ্যানকে জিজ্ঞাসা করা হবে কেন তারা দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে পুলিশের কাজকর্মে কর্তাদের নজরদারি করতে সুবিধে হবে।” সম্প্রতি বর্ধমান সফরে এসে পুলিশকে সক্রিয় হতে ও টহলদারি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২০১০ সালে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৭২৭জনের। আহতের সংখ্যা ছিল ৭৮৮। এর মধ্যে ৫৯৫টিই ঘটেছিল জাতীয় সড়কে। আর ৪১০টি রাজ্য সড়কে। ২০১১ সালে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৬৬৩, আহতের সংখ্যা ৫৩৯। সে বার ৪৫৫টি জাতীয় সড়কে ও ২৯৫টি রাজ্য সড়কে ঘটেছিল। ২০১২ সালেও দুর্ঘটনায় ৪৮৫ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন ৬৭৭ জন। ২০১৩ সালে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০৬। আহত হন ৮৭৯ জন। এই দুর্ঘটনার ২৫৮টি জাতীয় ১৩৩টি রাজ্য সড়কে ঘটে। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটেছে ২৭৩ জনের। আহত হয়েছেন ৩৬২ জন। এর মধ্যে ১৩২টি জাতীয় সড়কে ও ২৫টি জাতীয় সড়কে ঘটেছে। এ সমস্ত পরিসংখ্যা মাথায় রেখে জামালপুর, মেমারি, বর্ধমান, গলসি, বুদবুদ, কাঁকসা, কাটোয়া, ভাতার ও পূর্বস্থলী থানা এলাকায় মোট ৩৭টি জায়গায় জাতীয় ও রাজ্য সড়কে সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ। প্রস্তাবিত জায়গাগুলির মধ্যে ৯টি রয়েছে বর্ধমান থানা এলাকায়, ৮টি রয়েছে জামালপুর থানা এলাকায়, ৫টি রয়েছে মেমারিতে, চারটি করে কাঁকসা ও কাটোয়াতে, দুটি করে রয়েছে গলসি, বুদবুদ পূর্বস্থলীতে। ভাতারে রয়েছে একটি।

পুলিশ কর্তাদের আশা, মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা হয়তো কমবে না, তবে দুর্ঘটনার কিনারা অন্তত দ্রুত করা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement