ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। সোমবার সকালে শক্তিগড় ও পালশিটের মাঝে লেভেল ক্রশিংসের কাছ থেকে বাসুদেব কুণ্ডু (৩৭) নামে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান জিআরপি। তাঁর পকেট থেকে মেলা সুইসাইড নোটে তিনি নিজের স্ত্রী ও পুলিশকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করে গিয়েছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, বাসুদেববাবুর বাড়ি স্থানীয় আমড়া গ্রামে। বিস্কুট কারখানায় কাজ করতেন তিনি। পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে অশান্তির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন স্ত্রী অপর্ণাদেবী। খোরপোশের নির্দেশ দেয় আদালত। তিনি তা না দিতে পারায় তাঁকে কয়েক বার গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মৃতের দাদা মহাদেব কুণ্ডুু বলেন, “ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বনিবনা হত না। ওর স্ত্রী আদালতে ওর বিরুদ্ধে মামলাও করে। সেই টাকা দিতে না পারায় বেশ কয়েকবার ভাইকে পুলিশ ধরে জেলে পাঠায়। শনিবার দুপুরেও বর্ধমান থানার পুলিশ গিয়ে বাড়ি থেকে ভাইকে বের করে প্রচুর মারধর করে। ভাই পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তার ডান পায়ে গুলি করে। এতে লোকজন জড়ো হতে পুলিশ চলে যায়।” পরে আহত পা নিয়েই বাসুদেববাবু বাড়ি থেকে বের হয়ে পালশিট স্টেশনের কাছে চলে যান। এরপরেই মহাদেববাবুরা খবর পান, বাসুদেববাবু আত্মঘাতী হয়েছেন।
বাসুদেববাবুর পকেট থেকে যে সুইসাইড নোটটি পাওয়া গিয়েছে, সেখানে তিনি লিখেছেন, “মানসন্মান গেলেও আমার বাঁচার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু পুলিশের অত্যাচারে আমার কাজটা চলে গেল। এখন আমি কি করে বাঁচব। আমি তো কোনও খারাপ কাজ করতে পারব না। কারখানাতে কাজও করতে পারব না। এবং পালিয়ে যেতেও পারব না। কারণ আমি কোনও অন্যায় কাজ করিনি। তাই আমি না পালিয়ে (সবার সামনে) মরলাম। এর জন্য দায়ী আমার বৌ এবং পুলিশ।” বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর অবশ্য বলেন, “ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে বাধ্য। তবে তাঁর পায়ে গুলি করা হয়েছে, এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর উপরে কী অত্যাচার করা হয়েছিল, পরিবারের অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখব।”