ট্রেকারের টানে চাকা গড়াল রথের

ধুমধামের সঙ্গে পালিত হল রথযাত্রা। কোথাও সাধারণ মানুষের হাতে, আবার কোথাও ট্রেকারের টানে এগিয়ে গেল রথের রশি। আসানসোল পুর এলাকায় এ বার মানুষের মূল উৎসাহ ছিল ইসকনের রথকে কেন্দ্র করে। ইসকনের বুধা শাখা আয়োজিত এই রথযাত্রা উপলক্ষে ভক্তদের উপস্থিতি ছল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই কয়েক হাজার মানুষ বরফকল এলাকায় ইসকনের মন্দির চত্বরে হাজির হন। ইসকন মন্দিরের সেবক ভগবান দাস জানান, এই রথযাত্রা এ বছর চার বছরে পড়ল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০১:৪০
Share:

ধুমধামের সঙ্গে পালিত হল রথযাত্রা। কোথাও সাধারণ মানুষের হাতে, আবার কোথাও ট্রেকারের টানে এগিয়ে গেল রথের রশি।

Advertisement

আসানসোল পুর এলাকায় এ বার মানুষের মূল উৎসাহ ছিল ইসকনের রথকে কেন্দ্র করে। ইসকনের বুধা শাখা আয়োজিত এই রথযাত্রা উপলক্ষে ভক্তদের উপস্থিতি ছল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই কয়েক হাজার মানুষ বরফকল এলাকায় ইসকনের মন্দির চত্বরে হাজির হন। ইসকন মন্দিরের সেবক ভগবান দাস জানান, এই রথযাত্রা এ বছর চার বছরে পড়ল। উদ্যোক্তারা জানান, রথ উপলক্ষে আসানসোল বুধা ময়দানে বসেছে মেলা। সেখানে ৯ দিন ধরে ভক্তিমূলক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। ইসকন ছাড়াও বার্নপুরের উৎকল সমাজের রথ ঘিরেও ভাল ভিড় হয়েছিল। উৎকল সমাজের পক্ষে গৌতমকুমার নায়েক জানান, এ বছর ৩৬ বছরে পা দিল তাদের রথযাত্রা। এলাকায় ব্যবসার প্রয়োজনে আসা উৎকল সম্প্রদায়ের মানুষ এই রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেন। এই রথের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ধ্রুবডাঙা, শান্তিনগর, সুভাষপল্লি ও হিরাপুরের বাসিন্দারা।

অতীতের জৌলুস হারিয়ে গেলেও এ দিন অন্ডালের উখড়া, রানিগঞ্জের সিহারশোল ও কুলটির বেলরুইগ্রামে জমিদার বাড়ির রথ উৎসব পালিত হয় পারিবারিক কৌলিন্য বজায় রেখে। রথে রাখা হয়েছিল পারিবারিক কুলদেবতাদের। উখড়ার জমিদার বাড়ির সদস্য শোভনলাল সিংহ হান্ডা জানান, ১৭৬ বছর আগে তাঁদের রথ উৎসব শুরু হয়েছিল। বর্তমানে রথ টানা হয় ট্রেকারের সাহায্যে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যই এই ব্যবস্থা। বেলরুই জমিদারবাড়ির রথে রয়েছে লক্ষ্মী-জর্নাদনের শিলামূর্তি। আগে এই জমিদারবাড়ির রথে ছিল পিতল দিয়ে ঢাকা উঁচু চুড়া। এখন রয়েছে লোহার রথ। এই জমিদারবাড়ির সদস্য স্থানীয় পুরসভার উপপুরপ্রধান বাচ্চু রায় বলেন, আগে রথের সময় এক সপ্তাহ ধরে মেলা হত। এখন অবশ্য শুধু উল্টোরথেই মেলা বসে। রানিগঞ্জের সিহারশোল জমিদারবাড়ির রথ শুরু হয়েছিল ১৮৩৬ সালে। কাঠের তৈরি এই রথ ১৯২৫ সালে আগুনে পুড়ে যায়। তার পরে তৈরি করা হয় পিতলের রথ।

Advertisement

কুলটির ইস্কো আবাসন এলাকায় উৎকল সমাজের রথ এ বার ৫০ বছর পার করল। রথ উপলক্ষে বসেছে মেলা। সংগঠকেরা জানান, আগে এই রথকে ঘিরে বিশাল মেলা বসত। কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবা র পরে আড়ম্বর অনেকটাই কমে গেলেও মানুষের উৎসাহ কমেনি। বরাকরের গৌরাঙ্গ মন্দির পরিচালন সমিতির রথ এ বছর ৪৯ বছর পড়েছে। উদ্যোক্তারা জানান, গৌরাঙ্গ মন্দিরের প্রধান সাধু সীতারাম বাবা এই রথ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বারাবনির চরনপুর এলাকার একশো বছরেরও বেশি পুরনো রথ উৎসব এ বারও পালিত হয়। রথ উপলক্ষে বসেছে ছোট মেলা। দোমহানি এলাকার রথ উৎসব এ বার ৬ বছরে পা দিয়েছে। সালানপুর রূপনারায়নপুর চিত্তরঞ্জনের বিভিন্ন এলাকাতেও এ বার রথযাত্রা উপলক্ষে চোখে পরেছে উৎসাহ।

দুর্গাপুর রথযাত্রা উৎসব ও সমাজ কল্যাণ সমিতি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করে আসছে। রবিবার স্থানীয় জগন্নাথ মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি রথে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজীব গাঁধি ময়দানে। আবার উল্টো রথের দিন এই রথ ফিরিয়ে আনা হবে। রথ উপলক্ষে বসেছে মেলা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন ৯ জুলাই। রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement