বৈঠক বামফ্রন্টের।—নিজস্ব চিত্র।
ঘরছাড়া কর্মীদের বাড়ি ফেরানোর দাবি থেকে জেলায় নানা কল-কারখানায় শাসকদলের লোকজনের দৌরাত্ম্যের অভিযোগে সরব হল বামেরা।
ঘরছাড়া সিপিএম কর্মীদের ঘরে ফেরানো, তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’, মহিলাদের নিরাপত্তাহীনতা-সহ নানা অভিযোগে ৬-৮ অগস্ট তিন দিনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে জেলা বামফ্রন্ট। সোমবার বিকেলে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “ওই তিন দিন বর্ধমান শহরের বীরহাটা লাগোয়া পার্বতী মাঠে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান চলবে।” অমলবাবুর দাবি, তিন দিন সব সময়ে অবস্থান মঞ্চে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ একসঙ্গে উপস্থিত থাকবেন। তাঁর আরও দাবি, জেলায় বামেরা এই প্রথম এমন কর্মসূচি নিচ্ছে। অবস্থানে বিধায়ক থেকে পঞ্চায়েত সদস্য সবাই উপস্থিত থাকবেন। একই সঙ্গে দলের সহযোগিতায় একটি স্যাটেলাইট চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সোমবার অমলবাবু অভিযোগ করেন, লোকসভা ভোটে সন্ত্রাস করে জেতার পরেই জেলার নানা প্রান্তে বামপন্থী কর্মী-সমর্থকদের উপর তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে। বামফ্রন্টের নেতাদের দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে কেতুগ্রামের আসমিরা বেগম ও মন্তেশ্বরের কাজল মল্লিকের। বামফ্রন্টের নেতা বীরেশ মণ্ডল, তাপস চট্টোপাধ্যায়, অলক ভট্টাচার্য, দেশবন্ধু হাজরা, নূর আলম-সহ অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। মিথ্যা মামলাতেও ফাঁসানো হয়েছে অনেককে। তৃণমূলের তোলাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে জেলায় অনেক কল-কারখানাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শ্রমিকেরা কাজ হারাচ্ছেন।
কিছু দিন আগেই বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরে দলের ঘরছাড়া কর্মীদের ফেরাতে গিয়েছিল বিমান বসুর নেতৃত্বাধীন বামেদের একটি দল। কিন্তু তৃণমূলের লোকজনের বাধায় তাঁদের ফিরে আসতে হয় বলে অভিযোগ। বাড়ি ফেরা কর্মীরাও গ্রামে থাকতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছিলেন বাম নেতারা। এ বার জেলার ঘরছাড়াদের ফেরানোর জন্য ফের আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জেলার বাম নেতারা জানান।
বামফ্রন্টের আদর্শ তুলে ধরতে একটি নতুন স্যাটেলাইট চ্যানেল তৈরি করা হবে বলে জানানো হয় এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমলবাবু বলেন,‘‘বামপন্থীদের নীতি ও আদর্শ ঠিক ভাবে তুলে ধরা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত চ্যানেল ঠিক সরাসরি দলের চ্যানেল না হলেও, তাকে সমর্থন দেব আমরা।’’ আপাতত বর্ধমান-সহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় এই চ্যানেলটি দেখা যাবে বলে সিপিএম সূত্রে খবর।
সিপিএমের প্রতিবাদ কর্মসূচি ও স্যাটেলাইট চ্যানেল তৈরি প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সিপিএমের অনেক নেতা দল ছেড়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে ওদের নানা কর্মসূচি নিতে হচ্ছে।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, আগে সিপিএম নেতাদের কয়েকটি চ্যানেল নিয়মিত বক্তব্য পেশ করতে দিত। কিন্তু এখন সেই চ্যানেলগুলি সিপিএম নেতাদের পাত্তা দিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে নিজেদের চ্যানেল খুলছে সিপিএম।