অস্থায়ী কর্মী থেকে স্থায়ীকরণের সময়ে গ্রাহ্য হয়েছিল গড় বয়স। সেই হিসেব অনুযায়ী রেলের চার কর্মীর অবসর নেওয়ার কথা ছিল গত ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু, স্কুলের শংসাপত্র অনুযায়ী তাঁদের যা বয়স, তাতে আরও অন্তত বছর পাঁচেক বেশি চাকরি করার কথা তাঁদের। আদালতের দ্বারস্থ হয়ে চাকরির মেয়াদ বাড়ল আসানসোলের ওই রেলকর্মীদের।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চার কর্মী মদনারায়ন সিংহ, রাজেশ্বের গিরি, ব্রিজভূষণ সিংহ ও নওলকিশোর সিংহ পার্সেল পোর্টারের কাজ করেন। তাঁদের আইনজীবী বিজয় দাস জানান, ২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর চার জনকে স্থায়ী পদে নিয়োগ করে রেলের আসানসোল বিভাগ। এর পরে তাঁদের চার জনকে বয়স নির্ধারণের জন্য রেলের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে পরীক্ষার পরে মেডিক্যাল বোর্ড রেলকে জানায়, ওই চার জনের বয়স ৪০-৪৫ বছরের মধ্যে। কিন্তু রেলের তরফে চার জনের জন্ম তারিখই ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি বলে নথিভুক্ত করা হয়। কিন্তু আসলে নওলকিশোরের ১৯৬২ সালে এবং অন্য তিন জনের ১৯৬০ সালে জন্ম। রাজেশ্বর ১৯৭৯ এবং বাকি তিন জন ১৯৮০ সাল থেকে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করে এসেছেন।
আইনজীবী বিজয়বাবু জানান, স্থায়ী পদে যোগ দেওয়ার পরে চার জনকে স্কুলের শংসাপত্র জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু পরে তাঁরা জানতে পারেন, সেই শংসাপত্রকে আমল না দিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড নির্ধারিত গড় বয়সকেই গ্রাহ্য করেছেন কর্তৃপক্ষ। তাতে তাঁদের অবসর নিতে হবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। এর বিরুদ্ধে তাঁরা ২০১৩ সালের ২৩ অগস্ট সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন। সম্প্রতি আদালত নির্দেশ দেয়, স্কুলের শংসাপত্র থাকলে মেডিক্যাল বোর্ড নির্ধারিত গড় বয়স মাপকাঠি হতে পারে না। রেল কর্তৃপক্ষকে শংসাপত্রের ভিত্তিতে চাকরির মেয়াদ নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজয়বাবুর দাবি, তাঁর মক্কেলরা স্কুলের শংসাপত্র জমা দেওয়ার পরে তাঁদের সার্ভিস বুকে সঠিক জন্মতারিখ লেখা হয়। কিন্তু তার পরেও তাঁদের রেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। রেলের তরফে জানানো হয়, কর্মীদের জন্মতারিখের প্রমাণপত্র না থাকলে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও ওই কর্মীদের বয়স নির্ধারণে হাসপাতালে পাঠানো হল কেন, সে ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রেলের কর্তারা। আসানসোল ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু বলেন, “এটি রেলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে তা মানা হবে।”