গরমের মধ্যে লোডশেডিং বারবার, ক্ষোভ

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জেরবার শহরবাসী। সে নিয়ে অসন্তোষ ছিলই। লোডশেডিংয়ের জেরে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে না পাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষোভ বাড়ল আসানসোলে। শহরের নানা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় এক মাস ধরে প্রচণ্ড লোডশেডিং চলছে। তাতে লাগাম পড়াতে পারছে না বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৪ ০১:০৫
Share:

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পরে পথে জনতা। বৃহস্পতিবার রাতের নিজস্ব চিত্র।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জেরবার শহরবাসী। সে নিয়ে অসন্তোষ ছিলই। লোডশেডিংয়ের জেরে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে না পাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষোভ বাড়ল আসানসোলে।

Advertisement

শহরের নানা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় এক মাস ধরে প্রচণ্ড লোডশেডিং চলছে। তাতে লাগাম পড়াতে পারছে না বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। শুধু তাই নয়, এই সমস্যার কথা জানাতে গেলে সংস্থার কর্তারা বাসিন্দাদের সঙ্গে অসহযোগিতা, এমনকী দুর্ব্যবহারও করছেন বলে অভিযোগ। তবে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ও জেলা প্রশাসনের দাবি, শনিবারের মধ্যে লোডশেডিংয়ের প্রকোপ অনেকটা কমবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের রেলপাড়, রাহা লেন, বাজার অঞ্চল, ইসমাইল, হিলভিউ, রাধানগর রোড, বার্নপুরের শান্তিনগর, নরসিংহবাঁধ, সুভাষপল্লি, রূপনারায়ণপুর-সহ আশপাশের এলাকা, রানিগঞ্জ, কুলটি, বরাকরে লোডসেডিং মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই এই অবস্থা শুরু হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, দিনে বারো ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না। আসানসোল রেলপাড়ের বাসিন্দা, ষাটোর্ধ্ব মহাদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় প্রতি দিন মাঝ রাতে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ঘুম হচ্ছে না। সারা রাত জেগে কাটাতে হচ্ছে।” এই গরমে প্রচণ্ড লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে বেশি মুশকিলে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পারছেন না। এর সঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবল। লোডশেডিংয়ের ফলে খেলা দেখাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাতে আরও ক্ষুব্ধ শহরবাসী। তাঁরা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ও প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে আবেদন করেছেন, বিশ্বকাপ চলাকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।

Advertisement

আসানসোল শহর-সহ আশপাশের এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে এই লাগামছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণ কী, তা জানতে চাওয়া হলে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোল শাখার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শ্রীমন্ত রায় জানান, গত কয়েক দিনে দফায় দফায় নানা এলাকায় ঝড় হয়েছে। ফলে, একাধিক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ পরিবাহী তার ছিঁড়ে গিয়েছে। সে সব মেরামতির জন্য কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। তিনি অবশ্য বলেন, “সব কাজ আমরা প্রায় শেষ করে এনেছি। শনিবারের মধ্যে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” শহরবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের খবরাখবর জানাতে বিদ্যুৎ সংস্থার তরফে যে টোল-ফ্রি নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেটি প্রায় কোনও সময়েই কাজ করে না। সংস্থার স্থানীয় শাখা অফিসে যোগাযোগ করলে পর্ষদ কর্মী থেকে আধিকারিকেরা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। শ্রীমন্তবাবু জানান, বাসিন্দাদের এই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক অমিত দত্ত জানান, আসানসোল-সহ আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। জেলাশাসকের নির্দেশে একাধিক ব্যবস্থামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। দ্রুত এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে বলে তাঁর আশ্বাস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement