এক দিকে কেন্দ্রের বিনিয়োগে চাঙ্গা হচ্ছে এই শিল্পাঞ্চলের অর্থনীতি। আবার কেন্দ্রের পাঠানো টাকা রাজ্য সরকার ঠিক মতো খরচ না করায় বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী---প্রচারে এই দুই অভিযোগকে অস্ত্র করছেন আসানসোলের কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রাণী মিশ্র।
জনসভা এখনও শুরু করেননি। তবে এলাকা ঘুরে ও কর্মিসভার মাধ্যমে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন এই কংগ্রেস প্রার্থী। সময় পেলে আবার বসে পড়ছেন ফেসবুকে। সেখানেও ভোটারদের সঙ্গে চলছে মত বিনিময়। ইন্দ্রাণী জানান, মূলত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকেই হাতিয়ার করছেন প্রচারে। শিল্পাঞ্চল আসানসোলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও খনিতে কেন্দ্রীয় বিনিয়োগের ফলে শ্রমিক-কর্মীদের উপকার ও এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরছেন তিনি। প্রায় তিন দশক ধরে ধুঁকতে থাকা ইস্কোর পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ, ইসিএল এবং চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য বিনিয়োগের কথা বলছেন তিনি। তাঁর দাবি, এর ফলে সরাসরি উপকৃত হয়েছেন সংস্থাগুলির সঙ্গে জড়িত প্রায় দেড় লক্ষ শ্রমিক-কর্মী। এ ছাড়া বেসরকারি ক্ষেত্রে লগ্নি, কর্মসংস্থান হয়েছে বলে দাবি তাঁর। রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্তান কেব্লস কারখানা বাঁচিয়ে তোলার জন্য কেন্দ্র অর্ডন্যান্স ফ্যাকট্রি বোর্ডের মাধ্যমে অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া জারি রেখেছে, দক্ষিণবঙ্গের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে এই শিল্পাঞ্চলের উপর দিয়ে রেল ফ্রেট করিডোর বানাচ্ছে, এ সব আশ্বাসও দিচ্ছেন তিনি।
এর সঙ্গে রাজ্যের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন ইন্দ্রাণী। তাঁর অভিযোগ, “নিয়ম অনুযায়ী পরিষেবা খাতে উন্নয়নের টাকা রাজ্য সরকারের মাধ্যমে খরচ হয়। সেই টাকা সরকারের ঘরে আসছে। কিন্তু সরকারি উদাসীনতায় তা ঠিক মতো খরচ হচ্ছে না।” এর উদাহরণ হিসেবে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে আসানসোলে দ্বিতীয় জল প্রকল্প চালু না হওয়া, কুলটির জলপ্রকল্পের টাকা ফেরত, রাজীব গাঁধী বিদ্যুৎ যোজনা ও ইন্দিরা আবাস যোজনার কাজ না হওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি।
প্রচারে এ সব নিয়ে সরব হলেও ইন্দ্রাণীকে প্রার্থী করা নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ রয়েছে। এ ব্যাপারে দলের একাংশ এখনও ক্ষুব্ধ। শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত দলের একটি অংশের কর্মী-সদস্য প্রার্থিপদ নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছে। ইন্দ্রাণী অবশ্য বলছেন, “আমি সবার কাছেই সমর্থনের জন্য গিয়েছি।” রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থীর তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক মলয় ঘটকের দাবি, “গত তিন বছরে রাজ্যের মানুষ দেখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী উন্নয়ন করেছেন। সে জন্যই এ বার তৃণমূল প্রার্থীরা জিতবেন। কারও ভিত্তিহীন অভিযোগে কিছু আসে-যায় না।”