জেলা ভাগের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা কবে বাস্তবায়িত হবে, পরিষ্কার নয়। তাই বসে না থেকে জেলার পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য আসানসোলে পুরোদস্তুর অফিস চালু করায় উদ্যোগী হয়েছে বর্ধমান জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে আটের দশকের শেষ দিক থেকে আদালত ভবনের একাংশে জেলা পরিষদের একটি ছোট অফিস ছিল। সেখানে এক জন সহকারী বাস্তুকার ও সাত কর্মী কাজকর্ম করতেন। কিন্তু তাতে খুব বেশি সমস্যা মিটত না বাসিন্দাদের। ফলে জেলা পরিষদে কাজ থাকলে আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর ইত্যাদি এলাকার বাসিন্দাদের বর্ধমান যাওয়া ছাড়া গতি ছিল না। জেলা সদরে গিয়ে কাজ সেরে ফিরে আসতে গোটা একটি দিন পেরিয়ে যায়। বাসিন্দাদের অসুবিধার বিষয়টি তো ছিলই।
“জেলা পরিষদের টিম সপ্তাহে একবার যাবে। মানুষের সুবিধা-অসুবিধা দেখবে ও কাজের তদারকি করবে।”
দেবু টুডু
জেলা সভাধিপতি
এ ছাড়াও সরকারি নানা প্রকল্প রূপায়ণে গতি আনার জন্য জেলার পশ্চিমাঞ্চলে একটি পুরোদস্তুর অফিসের প্রয়োজন রয়েছে বলে জেলা পরিষদের কর্তারা মনে করছিলেন। সে জন্য মার্চ থেকেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু সপ্তাহে এক দিন করে সেখানে যাওয়া শুরু করেছেন। মাঝে লোকসভা ভোটের জন্য সরকারি উন্নয়নমূলক কাজকর্ম থমকে ছিল। এ বার তা মিটে গিয়েছে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্র আসানসোলের অফিসটিকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে।
আসানসোল-দুর্গাপুর এলাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলাদা জেলা তৈরির দাবি উঠেছে। রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই দাবি আরও জোরালো হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা ভাগের প্রক্রিয়ায় সায় দেন। জেলা ভাগের প্রস্তাবে একমত হয় সব রাজনৈতিক দলও। ইতিমধ্যে আসানসোল ও দুর্গাপুরের জন্য আলাদা পুলিশ কমিশনারেট গড়া হয়েছে। আসানসোল মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। এই খনি-শিল্পাঞ্চলে ৯টি পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে। পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৭১। এই এলাকা থেকে ২০ জন জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিস্তীর্ণ এই এলাকার উন্নয়নমূলক কাজকর্ম দেখাশোনা করতে আসানসোলের অফিসটিকে পূর্ণাঙ্গ অফিস হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ হয়েছে বলে জানান সভাধিপতি দেবু টুডু। তিনি বলেন, “একটি ছোট অফিস ছিল। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। ওই এলাকায় কাজে গতি আনতেই এই উদ্যোগ।”
জেলা পরিষদ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সভাধিপতি সপ্তাহে এক দিন এবং সহ-সভাধিপতি সপ্তাহে দু’দিন বর্ধমান থেকে আসানসোল আসছেন। এখনও পর্যন্ত মূলত জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সপ্তাহে দু’দিন সেখানে থেকে কাজকর্ম পরিচালনা করছিলেন। এ বার বিদ্যুত্ ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষও সপ্তাহে দু’দিন করে সেখানে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। সভাধিপতি দেবুবাবু বলেন, “জেলা পরিষদের পুরো ‘টিম’ সেখানে সপ্তাহে এক বার করে যাবে। সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধা দেখার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের কাজকর্মও তদারকি করবেন তাঁরা।”