ক্লাস শুরু হয়েছে আড়াই মাস আগে। নভেম্বরে টেস্ট। অথচ মহকুমার অর্ধেকের বেশি পড়ুয়ার হাতেই পৌঁছয়নি ‘বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস’ বইটি। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিযোগ, বই না পাওয়ায় অথৈ জলে পড়েছেন তাঁরা। ব্যহত হচ্ছে পঠন-পাঠনও।
সরকারি নিয়ম মেনে মে মাসের গোড়াতেই দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে স্কুলগুলিতে। শুরুর কিছুদিন বাজারে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসের ওই বইটি পাওয়া যাচ্ছিল। অনেক পড়ুয়াই বইটি কিনে পড়া শুরু করে দেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই বইয়ের সিলেবাসে থাকা কবীর সুমন প্রসঙ্গটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বাতিল করে দেওয়া হয় বইটি।
তার পরে মাসখানেক কেটে গিয়েছে। সংশোধনের পরে রাজ্য সরকারের তরফে ১৯ অগস্ট ‘বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃৃতির ইতিহাস’ বইটি পড়ুয়াদের দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু মাত্র ৫০ শতাংশ বই প্রধান শিক্ষকেরা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। ফলে কাকে দেবেন আর কাকে দেবেন না তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষকেরা।
মহকুমার বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, সব স্কুলেই ৫০ শতাংশ বই এসেছে। এ বিষয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী স্কুল পরিদর্শক সুকুমার সেন জানান, নির্দিষ্ট দফতর থেকে ৬ হাজার বই দেওয়া হয়েছে। তা দিয়ে সমস্ত স্কুলে প্রথম পর্যায়ে ৫০ শতাংশ বই সমবন্টন করা হয়েছে। বাকি বই এলে পরে বিলি করে দেওয়া হবে।
তবে ছাত্রছাত্রীরা বেশ নারাজ বিষয়টি নিয়ে। অভিভাবকদেরও অভিযোগ, প্রথম পর্যায়ে বই কিনে দেওয়া হল, সেটা বাতিল হয়ে গেল। দ্বিতীয় পর্যায়ে সরকার থেকে বই দিয়েছে ঠিকই তা মাত্র ৫০ শতাংশ পড়ুয়াদের জন্য। তাহলে বাকিরা কি করবে। পরীক্ষার আগে পড়ুয়াদের সামনে এমন পরিস্থিতি না হলেই ভাল হত, বলে তাঁদের দাবি।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সঙ্গীতা পাল বলেন, “টেস্টের আর মাত্র দু’মাস বাকি। এখনও বই হাতে পাইনি। এখন কবে পাব সে জন্য বসে থাকতে হবে। তারপর বই পেলেও কী করে পুরো সিলেবাস শেষ করব বুঝতে পারছি না।” আর এক ছাত্র অনিমেশ বসাক জানান, বুধবারই তিনি বই পেয়েছেন। তবে দু’মাসের মধ্যে কী ভাবে সিলেবাস শেষ করবেন, তা নিয়ে চিন্তিত তিনিও।
পরীক্ষার আগে সব ছাত্রদের হাতে বই তুলে দিতে না পারায় চিন্তিত শিক্ষিক শিক্ষিকারাও। সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল বলেন, “শীঘ্র বাকি বই হাতে পেতে সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”