চালু কনভার্টার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় শেষের মুখে ইস্কোর আধুনিকীকরণ প্রকল্পের কাজ। রবিবার এমনটাই জানিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। ওই দিনই পরীক্ষামূলক ভাবে সংস্থার বিওএফ শপের তিন নম্বর কনভার্টার চালু করা হয়। কর্তৃপক্ষের আশা, নতুন বছরের গোড়ার দিকে আইএসপি-র সুসংহত ব্লাস্ট ফার্নেসের উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে।
সেলের চেয়ারম্যান সিএস বর্মা রবিবার আর্নপুরে আইএসপি-র আধুনিকীকরণ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে আসেন। তিনিই ওই কনভার্টার পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করেন। তার পরেই সংস্থার কার্যনির্বাহী আধিকারিক আই সি সাহু বলেন, “এই কনভার্টারটি চালু হওয়ায় সুসংহত ব্লাস্ট ফার্নেস নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের মুখে এসে পড়েছে। এটি চালু হলে প্রতি মাসে প্রায় তিন মিলিয়ন টন তপ্ত লোহা উৎপাদন হবে। তৈরি হবে ‘বেসিক অক্সিজেন প্ল্যান্ট’, ‘কনটিনিউয়াস কাস্টিং প্ল্যান্ট’ ইত্যাদি। ইতিমধ্যে এখানে শেষ হয়ে গিয়েছে ‘র মেটেরিয়াল হ্যান্ডলিং প্ল্যান্ট’। সাত মিটার উঁচু ‘কোকওভেন ব্যাটারি সিন্টার প্ল্যান্ট’-সহ আরও কয়েকটি বিভাগ। নতুন প্রকল্প এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বসানো হয়েছে পরিবেশ সহায়ক যন্ত্র।”
এ দিন সেখানে সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা বিদেশি বিশেষজ্ঞেরা। মাসখানেক আগেই এই কনভার্টারটির কাজের অগ্রগতি দেখতে এসেছিলেন সেল চেয়ারম্যান। তিনি সে দিন এটি দ্রুত শেষ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞদের। সেই কাজ ঠিক সময়ে শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান। এ দিনও তিনি সুসংহত ব্লাস্ট ফার্নেস নির্মাণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে করার উপরে জোর দিয়েছেন। আধুনিকীকরণ প্রকল্পের কাজ সুচারু ভাবে এগিয়ে য়াওয়ায় সেল চেয়ারম্যান সংস্থার সমস্ত শ্রমিক-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, আইএসপি-র উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হলে তা বিভিন্ন রাজ্যের নির্মাণ শিল্পের চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
১৯১৮ সালে তৈরি হয় বার্নপুরের ইস্কো কারখানা। সেটি রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয় ১৯৭২ সালে। আটের দশকের গোড়া থেকে কারখানা ধুঁকতে শুরু করে। সংস্থার শ্রমিক-কর্মীরা কারখানার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের দাবি তোলেন। প্রায় তিন দশক ধরে তাঁরা এই দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। অবশেষে ২০০৭ সালে সংস্থাটির আধুনিকীকরণের দায়িত্ব নেয় সেল। সে বছরের ২৪ ডিসেম্বর বার্নপুরে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৯৫৩ একর জায়গা জুড়ে কারখানার সম্প্রসারণ হয়েছে। বিনিয়োগ হচ্ছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা।