অফিস বন্ধ নিয়ে পুলিশি রিপোর্টে ক্ষুব্ধ সিপিএম

শাসকদলের সন্ত্রাস নয়, দলের কর্মী-সমর্থকের অভাবে নিজেদের পার্টি অফিস খুলতে পারছে না সিপিএমনির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তদন্ত করে দুর্গাপুরে এমনই রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের এই রিপোর্ট দেওয়ায় সরব হয়েছে সিপিএম। দলের নেতাদের অভিযোগ, সিপিএম ও তার গণ সংগঠনের একাধিক অফিসে হামলার অভিযোগের তদন্ত এক সময়ে পুলিশ করেছিল। অথচ এখন ভোটের মুখে রিপোর্টে উল্টো সুর পুলিশের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০২
Share:

শাসকদলের সন্ত্রাস নয়, দলের কর্মী-সমর্থকের অভাবে নিজেদের পার্টি অফিস খুলতে পারছে না সিপিএমনির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তদন্ত করে দুর্গাপুরে এমনই রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের এই রিপোর্ট দেওয়ায় সরব হয়েছে সিপিএম। দলের নেতাদের অভিযোগ, সিপিএম ও তার গণ সংগঠনের একাধিক অফিসে হামলার অভিযোগের তদন্ত এক সময়ে পুলিশ করেছিল। অথচ এখন ভোটের মুখে রিপোর্টে উল্টো সুর পুলিশের।

Advertisement

সম্প্রতি বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন, তৃণমূলের সন্ত্রাসে দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকায় অন্তত ৩০টি দলীয় কার্যালয় খোলা যাচ্ছে না। এই সব কার্যালয়ের বেশ কয়েকটিতে অতীতে তৃণমূলের লোকজন ভাঙচুর চালিয়েছে। পরে আর সেগুলি খুলতে দেওয়া হয়নি। ফলে, নির্বাচনী কাজকর্ম করতে অসুবিধা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয়। ১৫ মার্চ দুর্গাপুরের পুলিশের সিআই (এ) বিচিত্রবিকাশ রায় রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্ট মোতাবেক, দুর্গাপুর শহরের বেশ কিছু সিপিএম ও তাদের গণ সংগঠনের অফিস নিয়মিত খোলা হয় না। সিপিএমের সমর্থক নেই বলেই সেগুলি খোলা হয় না। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ‘এ জন্য তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সন্ত্রাস দায়ী নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মানুষজন জানিয়েছেন, সিপিএম কর্মী-সমর্থকের অভাবই এ জন্য দায়ী।’

পুলিশের এমন রিপোর্টের নিন্দা করেছেন সাইদুল হক। তাঁর অভিযোগ, “শাসকদলের মুখপত্র হয়ে কাজ করছে পুলিশ। তাই এমন মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।” সিপিএমের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল সম্পাদক পঙ্কজ রায়সরকারেরও দাবি, “অতীতে আমাদের বা আমাদের গণ সংগঠনের কার্যালয়ে তৃণমূলের প্রতিটি হামলার আলাদা অভিযোগ করেছিলাম। পুলিশ তদন্তও করেছিল। অথচ, এখন লোকসভা ভোটে শাসকদলের সুবিধার কথা ভেবে মিথ্যা রিপোর্ট বানাচ্ছে পুলিশ।” তিনি আরও জানান, প্রতিটি অভিযোগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে কী কী সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে, নিয়ম মেনে তা নথিবদ্ধ করেছিল পুলিশ।

Advertisement

সিপিএম নেতাদের দাবি, গত বছর ১১ এপ্রিল এমএএমসি লোকাল কমিটি, বিধাননগর হাউসিং সেক্টর কার্যালয়, বিধাননগর হাসপাতাল মোড়ের দলীয় কার্যালয় এবং এবিএল ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে জানলার ভাঙা কাচের টুকরো, আধপোড়া দলীয় পতাকা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ভাঙা ফটো ফ্রেম, ভাঙা টিউবলাইট, ভাঙা সাইনবোর্ড, ভাঙা সিলিং ফ্যান ইত্যাদি উদ্ধার করে পুলিশ। ১২ এপ্রিল বিধাননগরের ডিডিএ মার্কেট সেক্টর কার্যালয় থেকে ভাঙা জিনিসপত্র, যুব সংগঠনের ছেঁড়া পতাকা উদ্ধার হয়। ১৪ এপ্রিল জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জ কৃষকসভার কার্যালয় থেকে জানলার ভাঙা কাচ, তিনটি ভাঙা টিউবলাইট, পোড়া কাগজ, ছেঁড়া পতাকা, ভাঙা প্লাস্টিকের চেয়ার ইত্যাদি উদ্ধার করে পুলিশ। পঙ্কজবাবুর দাবি, “পুলিশই তো সিজার লিস্ট বানিয়েছিল। এখন দ্বিচারিতা করছে।”

পুলিশ অবশ্য কোনও দ্বিচারিতার কথা মানেনি। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক এলাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেই রিপোর্ট তৈরি করেছেন। এক পুলিশকর্তা বলেন, “ওই সমস্ত এলাকায় ইতিমধ্যে কড়া নজরদারি রয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলই যাতে ভোটের কাজকর্মে সমস্যায় না পড়ে তা দেখার জন্য নিয়মিত টহল চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement