স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফি দিন অশান্তি হতো। স্বামী মাঝেসাঝে স্ত্রীকে মারধর করতেন বলেও প্রতিবেশীদের অভিযোগ। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করায় রবিবার সন্ধ্যায় এক পড়শি যুবককে ছুরি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। কালনা শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পালপাড়ার ওই ঘটনার পরে অভিযুক্ত কার্তিক বর্মন পালালেও বধূ নির্যাতনের অভিযোগে তাঁর মা শুভা বর্মনকে আটক করেছে পুলিশ।
রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেন কার্তিক। বছর দেড়েক আগে তাঁর বিয়ে হয়। পালপাড়ার বাড়িতে থাকতেন মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিয়ের পর থেকেই কার্তিক ও তার স্ত্রী কাজলিদেবীর মধ্যে নিয়মিত গোলমাল হতো। ঝগড়া, চিৎকার, ক়টূক্তি, এমনকী, মারধরের আওয়াজও পেতেন তাঁরা। শুভাদেবীকে কখনও পূত্রবধূর পক্ষ নিতে দেখা যায়নি বলে দাবি পড়শিদের একটা বড় অংশের। উল্টে, কাজলিকে মারধরের প্রতিবাদ করায় কার্তিক ও শুভাদেবীর সঙ্গে প্রতিবেশিদের একাধিক বার গোলমাল হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে বাপের বাড়ি, নদিয়ার শান্তিপুরে চলে যান কাজলিদেবী। আর শ্বশুরবাড়িতে ফেরেননি। অভিযোগ, তারপর থেকে সুযোগ পেলেই প্রতিবেশিদের বাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়তেন কার্তিক। বহু নিষেধ, চোখ রাঙানি বা প্রতিবাদের পরেও তা থামেনি।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, রবিবার সন্ধ্যায় পড়শি খোকন দাসের বাড়িতে ইট ছোড়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন কার্তিক। বচসা বাধে। তখনই বাড়ি থেকে ছুরি এনে কার্তিক বছর তিরিশের খোকনবাবুর মুখে, ঘাড়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারেন বলে অভিযোগ। গোলমাল শুনে খোকনকে বাঁচাতে যান শৈলেন দাস নামে আর এক পড়শি। কার্তিক তাঁকে ইট ছুড়ে মারেন বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা খোকন এবং শৌলেনবাবুকে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যান। শৈলেনবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও খোকনবাবুর মুখে ১৪টি সেলাই পড়ে। হাসপাতাল থেকেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
খোকনবাবু সোমবার দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরেই স্ত্রীর উপরে অত্যাচার করতেন কার্তিক। কেন সেই অত্যাচার তা তিনি জানেন না। তবে বারবার বলার পরেও কার্তিক স্ত্রী-কে মারধর করা বন্ধ করেননি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওর স্ত্রী-কে মারধর করার প্রতিবাদ করছিলাম বলে আমাদের বাড়িতে নিয়মিত ইট ছুড়ত কার্তিক। হাতেনাতে ধরে ফেলতেই এই কাণ্ড।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই কার্তিক এলাকাছাড়া। তার খোঁজ চলছে। তবে কাজলিদেবীর সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।